উপ-সহকারী পরিচালকের চাকরিচ্যুতি নিয়ে রাস্তায় দুদক কর্মকর্তারা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রামের সাবেক উপসহকারী পরিচালক (পরে পটুয়াখালীতে কর্মরত) মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে সংস্থাটির কর্মকর্তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে দুদক কর্মকর্তারা সংস্থার সচিব মো. মাহবুব হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেন।

শরিফ উদ্দীনের অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে কমিশনের কর্মকর্তাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।

দুদক সচিবের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, কারও বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ কোনো কর্মচারীকে ৯০ দিনের নোটিশ দিয়ে অথবা ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ করে তাকে চাকরি হইতে অপসারণ করিতে পারিবে। অন্যদিকে সংবিধানের ১৩৫(২) নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, অনুরূপ পদে (প্রজাতন্ত্রের অসামরিক পদে) নিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান না করা পর্যন্ত তাহাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করা যাইবে না।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, দুদক কর্মকর্তা শরিফ উদ্দীন চট্টগ্রামে দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তিনি তার চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত থাকাকালে ৫২টি মামলা করেন। এছাড়া তিনি আদালতের বিচারার্থে ১৫টি চার্জশিট দাখিল করেন। তিনি কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা উদঘাটনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

শরীফ উদ্দিনের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের কারণে সংক্ষুব্ধ পক্ষগুলো বিভিন্ন সময়ে তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। ৫৪(২) বিধি প্রয়োগের মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা করার সমার্থক।

বুধবার দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তার চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দীন, উপ-সহকারী পরিচালক, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।’ এই আদেশ ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে গত বছর ১৬ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে মো. শরীফ উদ্দিনসহ আরও ২১ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছিল দুদকের বিভিন্ন ইউনিটে। তখন শরীফকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়।

শরিফ উদ্দীনের বিষয়ে ‘অসাংবিধানিক ও অমানবিক অপসারণ আদেশ’ প্রত্যাহার ও দুর্নীতি দমন কমিশন কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা, ২০০৮ এর ৫৪(২) বিধি বাতিল করে কমিশনের কর্মকর্তাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান প্রতিবাদকারী দুদক কর্মকর্তারা।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.