পাহাড় প্রেমিদের জন্য এবারের বইমেলার বিশেষ আকর্ষণ “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি”

পাহাড়? আহা! নামটাই যেন এক ভালোলাগা। কে না ভালোবাসে এই পাহাড়। কারো কারো কাছে পাহাড় সুন্দর এক দৃশ্যের নাম আর আবার কিছু মানুষের জন্য পাহাড় হচ্ছে রোমাঞ্চ। তবে সে যাই হোক না কেন সমতলের মানুষের গায়ে শিহরণ জাগানো এক ভালোলাগার নাম পাহাড়।

আমাদের দেশের অধিকাংশ জায়গাই সমতল। নদী, হাওর আর দিগন্ত বিস্তৃত ফসলি জমির অপরূপ সৌন্দর্য আমাদের দেশের মূল দৃশ্যের পরিচয় বহন করলেও আমাদেরও কিন্তু পাহাড় আছে। বাংলাদেশের সবথেকে উঁচু উঁচু পাহাড়গুলো আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেগুলো বেশ প্রাচীন এবং পাথুরে। যেগুলো মূলত বান্দরবান, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটি জেলায় বিস্তৃত। এছাড়াও কক্সবাজার, সিলেট এবং সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতেও কিছু ছোট-বড় পাহাড়ের দেখা মেলে। ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা এবং জামালপুর জেলার সীমান্ত এলাকায় দেখা মেলে গাড়ো পাহাড়ের।

তবে এই পাহাড়গুলো শুধু নিজের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রদর্শন করা অব্দিই সীমাবদ্ধ নয়, পাহাড়ের গহীনে লুকিয়ে আছে অসংখ্য ঝর্না আর লুকানো রোমাঞ্চকর সব পাহাড়ি ট্রেইল। শুধু তাই নয় কিছু কিছু পাহাড়ের গহীনে লুকিয়ে আছে ইতিহাস, সংগ্রাম আর প্রাচীনতার গল্প। পাহাড়ের আছে সংস্কৃতি, পাহাড়ের আছে প্রকৃতি আর বৈচিত্র। পাহাড়ের সেই সকল জানা-অজানা দিক সবার কাছে তুলে ধরতেই এবারের একুশে বইমেলায় আসছে বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হকের লিখা বই “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি”।

আদমশুমারির ন্যায় পাহাড় নিয়ে গবেষণা করে লিখা এই বইটি পড়লে জানা যাবে বাংলাদেশের সকল পাহাড়ের নাম, জানা যাবে পাহাড়গুলোর ভৌগলিক অবস্থান এবং পার্বত্য এলাকার অপরূপ সুন্দর সব প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা। শুধু তাই নয় বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্না, জলপ্রপাত, উপত্যকা, পাহাড়ি ছড়া এবং নদীর উৎপত্তিস্থল সহ পাহাড়ি বন ও প্রকৃত এবং প্রাণীকুলের বিষদ বর্ণনা।

এছাড়াও, বইটি পড়ে আরও জানা যাবে পাহাড়ি মানুষের বৈচিত্রময় সংস্কৃতি, পাহাড়ের ভূপ্রকৃতি এবং পাহাড়ের ভাজে ভাজে লুকিয়ে থাকা পর্যটনের অপার সম্ভাবনার কথা।

বইটি সম্পর্কে লেখক জিয়াউল হক বলেন, বইটিতে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি, বাংলাদেশের পাহাড়সমুহের সৃষ্টিকাল, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৮টি পাহাড়সারির নাম, অবস্থান, সারা বাংলাদের সর্বমোট ২৮২টি পাহাড়ের নাম, অবস্থান, পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা, জলপ্রপাত, কাপ্তাই হ্রদসহ সকল হ্রদ, উপত্যকা, উজানভূমি, পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ঝিরি, নদী, নদী অববাহিকা, সংরক্ষিত বন, বন্যপ্রাণী অনয়ারণ্য, পাহাড়ের পাশের সমুদ্র সৈকতসহ পার্বত্য এলাকার সমৃদ্ধ প্রকৃতিক সৌন্দর্যের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বইটি আমাদের দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি বইটি পাঠক প্রিয়তার পাশাপাশি আমাদের দেশের পর্যটন খাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।

ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে এবং অন্বয় প্রকাশের প্রকাশনায় জিয়াউল হকের লিখা “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি” বইটি আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া একুশে বইমেলার ৩৪ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে।

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.