‘ভ্রমণ ভিসায় এসে কাজ করলে সেটা একা নজরদারি সম্ভব না’

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, বিদেশি কর্মীরা ভ্রমণ ভিসা নিয়ে এসে দেশে কাজ করলে সেটা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে নজরদারি করা সম্ভব না। যদি উপার্জিত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নিজ দেশে পাঠায় তাহলেই সেটা এনবিআরের পক্ষে নজর রাখা সম্ভব।

আজ (০৭ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফের) সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ২০টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী। এসময় এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ইআরএফের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ইআরএফের একটি প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআরের একার পক্ষে খুব বেশিদূর যাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সব স্টেক হোল্ডারদের এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশি কর্মীরা যদি তাদের উপার্জিত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়ে যায় এনবিআর কেবল তখনই সেটা ধরতে পারে। সেটা অনেক ক্ষেত্রে ধরাও হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিনিয়োগ বোর্ড এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মীরা কাজ করছে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, বাজেটে দেশীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে স্থানীয় শিল্পকে গুরুত্ব দিতে চায় এনবিআর। কোন কোন খাতে সহায়তা দিলে স্থানীয় উৎপাদন বাড়বে এবং পরনির্ভরশীলতা কমে আসবে সে বিষয়ে কাজ করছে এনবিআর।

তিনি বলেন: স্থানীয় শিল্পকে উৎপাদনে সহায়তা দিতে চাই। কোন জায়গায় সহায়তা দিলে দেশীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং ভিন্ন ভিন্ন পণ্য উৎপাদন যাতে বাড়ে, সেটি দেখছি। রফতানিতে পোশাক শিল্পকে বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেটা সত্য। তবে আমরা পর্যালোচনার মাধ্যমে নতুন নতুন খাতকেও যুক্ত করছি। যেমন গত বছর বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং চামড়া খাতে অনেক সুবিধা দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদেও দেশে থাইল্যান্ড, কোরিয়া এমনকি পাকিস্তান থেকেও অনেক পণ্য আমদানি করা হয়। এসব পণ্য যেন দেশেই উৎপাদন হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও দেবো। তবে তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় বাড়াতে জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। অবিলম্বেই সেটা করতে পারবো।

করযোগ্য আয় রয়েছে, কিন্তু করের আওতার বাইরে রয়েছেন- এমন ব্যক্তিদের করের আওতায় আনতে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে আমাদের কালচার। দেশের নাগরিক হিসাবে কর দেওয়া প্রত্যেকের দায়িত্ব। এই কালচার আমাদেও মধ্যে এখনো গড়ে উঠেনি। এমনকি আন্ত:মন্ত্রণালয়গুলোতেও এই কালচার গড়ে উঠেনি।

এছাড়া, স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পরিকল্পনা গ্রহণ, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল, বিনিয়োগকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কর কাঠামো, বাংলা আয়কর আইন প্রণয়ন, রাজস্ব কাঠামো পরিবর্তন, ট্রান্স জেন্ডারদের জন্য করণীয়, বন্ড ফেসিলিটির অপব্যবহার রোধ করার কথা বলেন তিনি।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.