শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের খাবার ও চিকিৎসার জন্য টাকা দেওয়ায় ঢাকায় বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে সিলেট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ জানান, আটকরা এখন পথে আছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার মধ্যে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে উত্তরা এবং ফার্মগেট এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির টিম তাদের তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। এদের মধ্যে হাবিবুর রহমান স্বপন বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে পাস করেছেন ২০১২ সালে। একই বছর আর্কিটেকচার বিভাগ থেকে পাস করেছেন রেজা নূর মঈন দীপ এবং নাজমুস সাকিব দ্বীপ।
আটক ব্যক্তিদের পরিবার ও বন্ধুদের অভিযোগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে অর্থ সহায়তা করায় তাদের আটক করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির এক সূত্র জানায়, অনেক সময় পুলিশের অন্যান্য ইউনিটগুলো সিআইডির সহায়তা চেয়ে থাকে। এটা আসলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান। সিআইডি কেবল তাদের সহায়তা করেছে।
হাবিবুর রহমানের বন্ধু রেজা সিদ্দিকী বলেন, আমি যতটুকু হাবিবের কাছ থেকে শুনেছি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তার কাছে ফোন করে টাকা চেয়েছিল। সে বিকাশের মাধ্যমে ১০০০ টাকা পাঠিয়েছিল। এ ঘটনার জন্য সিআইডি একটি টিম সোমবার বিকালে উত্তরা আগোরার সামনে থেকে হাবিবকে এবং মঈনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। যখন তাদের সিআইডির টিম নিয়ে যাচ্ছে তখন সিআইডি টিমের সঙ্গে আমার কথা হয়। তারা আমাকে একটি কার্ড দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। তারা আমাদের জানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে, নাজমুস সাকিবের স্ত্রী নদী জানান, সাকিবের অফিস থেকে জানানো হয়েছিল সিআইডি সদস্যরা তাকে খুঁজছে। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়টি ঠিক নাকি ভুল, আবার কোনও প্রতারণার চক্কর কিনা, সেজন্য আমি আমার স্বামীকে থানায় পাঠাই। পরবর্তীতে জানতে পারি তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিআইডির একটি টিম তাকে ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু গতকাল সিআইডির মালিবাগ সদর দফতরের সামনে গিয়েও কোনও হদিস মেলেনি তার।
তিনি আরও বলেন, শাহজালাল থেকে কয়েক শিক্ষার্থী তাকে ফোন করে কিছু টাকা সহায়তা চায়। পরবর্তী সময়ে সে বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা পাঠিয়েছিল। এটাই হয়তো তার অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.