শাবিপ্রবি ভিসির বাসভবনের পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসির বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) রাতে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বাসভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমাদের ভাই-বোনেরা অনশন করছে। অন্যদিকে উপাচার্য বাসভবনের ভেতরে বসে আছেন, আর যে যাচ্ছেন তার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন, এটা হতে দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া আমরা কাউকে ভিসির বাসভবনে প্রবেশ করতে দেবো না।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরণ অনশনে ১০০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে না খেয়ে আছেন আমাদের ভাই-বোনেরা। অন্যদিকে ভিসি নিজ বাসভবনে বহাল তবিয়তে আছেন, তাই তার পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এর আগে রোববার বিকালে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মানবদেয়াল তৈরি করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া কাউকে ভিসির বাসভবনের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন তারা।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হলের সমস্যা নিরসনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রভোস্ট বডির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের হামলার বিচার দাবি করেন। পরে আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় লাঠিপেটার পাশাপাশি রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে উদ্ধার করে বাংলোতে পৌঁছে দেন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসা নেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন।

তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরণ অনশনে অংশ নেন ২৪ শিক্ষার্থী। পরবর্তী সমেয় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনৎসুস্থ হেয় সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী শনিবার রাতে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তবে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি ভিসির পদত্যাগ না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ও নিজেদের দাবিতে অটল থাকেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.