সরকারি কর্মকর্তাদের লেনদেন সহজ করতে সফটওয়্যার উদ্বোধন

সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ সব ধরনের লেনদেন পরিশোধের জন্য সফটওয়্যার উদ্বোধন করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। যা সরকারের অনলাইন লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ ভান্ডার হিসেবে পরিচিতি পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ সব ধরনের লেনদেন পরিশোধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক উন্নয়ন করে গভর্নমেন্ট ই-ট্রানজেকশন প্রসেসিং হাব সফটওয়্যার যা সরকারের অনলাইন লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ ভান্ডার হিসেবে পরিচিতি পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল রোববার পরীক্ষামূলক পরিচালনা শেষে (গভর্নমেন্ট ই-ট্রানজেকশন প্রসেসিং হাব সফটওয়্যার) এটির উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গভর্নর ফজলে কবির ও বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান।

জানা গেছে, সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও পেনশন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিধবা, বয়স্ক, পঙ্গুত্ব, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতা, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিল, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও মূলধন, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তির অর্থ সরাসরি স্ব-স্ব হিসাবে জমা করার জন্য সরকার কর্তৃক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে নয় কোটি গ্রহীতার ব্যাংক হিসাবে সরাসরি সরকারি অর্থ প্রেরণ করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। নতুন এই সফটওয়্যার যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সরকারি বিভিন্ন সেবা স্বল্প সময়ে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়াই হলো ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য। আগে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে ৩-৬ মাস সময় লাগতো। কিন্তু ইএফটির মাধ্যমে এখন তা মুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ সফট্ওয়্যারটির মাধ্যমে এ সেবা এখন আরও দ্রুততর হবে। এর ফলে সময় যেমন বাঁচবে একই সঙ্গে সরকারের খরচও কমবে। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের পেমেন্ট গেটওয়ে, তাই প্রতিষ্ঠানটি অটোমেশন ও ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় হ্রাস করার কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার বলে তিনি মনে করেন।

সভায় ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, নতুন এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইএফটি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইনহাউজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করার মধ্য দিয়ে যেমন নিজেদের প্রয়োজন মতো সফটওয়্যার তৈরি করছে একই সঙ্গে এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বর্তমান সময়ে এ সমন্বয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব লোকবল দ্বারা উদ্ভাবিত ১২৯টি সফটওয়্যারের মধ্যে ১২৪টি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে। তৃতীয় পক্ষ থেকে কেনা ১০টি সফটওয়্যারের বিকল্প নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি টিম কাজ করছে। নতুন এই সফটওয়্যার সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা জাতীয় পর্যায়ে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার অক্ষুন্ন রেখেছে।

এ ছাড়া আয়োজক হিসেবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন খান। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ্ মো. নাছের ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.