কর প্রক্রিয়া সহজ হলে ফাঁকির প্রবণতা কমবে: এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, কর দেওয়ার প্রক্রিয়া যত সহজ হবে, দেশের জনগন ততই কর দিতে উৎসাহিত হবেন এবং কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।

আজ রোববার (১২ ডিসেম্বর) এনবিআর’র অডিটোরিয়ামে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ট্যাক্স গাইডের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর হার কমানো, সেবার মান উন্নয়ন এবং কর প্রক্রিয়া অটোমেশনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যার সুফল দেশের ব্যবসায়ী সমাজসহ সাধারণ জনগন শিগগিরই ভোগ করবে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ডিসিসিআই প্রতিবছরই তাদের সুচিন্তিত প্রস্তাবনা পেশ করে থাকে এবং এনবিআর সেগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। এছাড়াও দেশের সার্বিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং এনবিআর’র প্রতিনিধিদলের সমন্বয়ে ‘টেকনিক্যাল’, ‘গবেষণা’ এবং ‘বিজনেস প্রসেস’ প্রভৃতি খাত ভিত্তিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করার বিষয়ে তিনি বলেন, যার মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, আগামী ২০ বছরের প্রয়োজনের নিরিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দক্ষ জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে একটি কাঠামো প্রণয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সাধারণ জনগনের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমাজকে কর দিতে উৎসাহিত করার জন্য বিদ্যমান কর নীতিমালার সহজীকরণ করা প্রয়োজন এবং দেশে একটি করবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে ঢাকা চেম্বার একযোগে কাজ করছে, যা আগামীতে অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, শতবর্ষ পুরোনো ‘আয়কর আইন’ সংশোধন ও যুগোপযোগীকরণের লক্ষ্যে এনবিআর নিরলসভাবে কাজ করছে এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সকলের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চুড়ান্ত হলে, তা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৮০ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত হতে এবং দেশের উন্নয়নে এ খাতের ভূমিকা আরো সুদৃঢ় করার জন্য ব্যবসা সহায়ক নীতিমালার কোন বিকল্প নেই। তিনি জানান, ঢাকা চেম্বার প্রণীত ‘ট্যাক্স গাইড ২০২১-২২’ সংগঠনের সব সদস্যবৃন্দকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ কর প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবে এবং কর প্রদানে আরো উৎসাহিত হবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, দেশিয় বিনিয়োগের সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে দ্রুততম সময়ে সামগ্রিক কর কাঠামোর আমূল সংষ্কার ও যুগোপযোগীকরণের কোন বিকল্প নেই এবং এ ব্যাপারে এনবিআরকে আরো বেশি হারে মানোনিবেশ করা প্রয়োজন বলে, তিনি মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই প্রতিবছর ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও ব্যক্তি পর্যায়ে ট্যাক্স দিতে উৎসাহিকরণের নিমিত্তে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের পরপরই ট্যাক্স গাইডটি প্রকাশ করে থাকে। কর সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা দিতে ঢাকা চেম্বার দীর্ঘদিন থেকে এ গাইডটি প্রকাশ করে আসছে। আয়কর, আমদানি শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে সর্বশেষ সংশোধন এবং সংযোজন সন্নিবেশিত করে ২০২১-২২ অর্থবৎসরের জন্য উপযোগী করে এ বৎসরের ট্যাক্স গাইডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়াও গাইডটিতে বিভিন্ন সিডিউল এবং এসআরওসমূহের তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে, যা কিনা ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এবং অন্যান্য ব্যবসায় সংগঠনসমূহকে বিশেষভাবে সহায়তা করবে ও দেশের কর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করবে।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.