ঢাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, মামলায় আসামি ৪ হাজার

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে রাজধানীর নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, রমনা ও চকবাজার থানায় তিন মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করা ও অজ্ঞাতনামা চার হাজারের বেশি আসামির মধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন রোববার এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জনকে আসামি করে মামলা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রমনা থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়। এজাহারভুক্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পল্টন থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ২ থেকে আড়াই হাজার ব্যক্তির নামে মামলা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ৬ জনকে।

ফারুক হোসেন বলেন, পুলিশের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত বাকিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গত শুক্রবার বেলা ১টা ২৫ মিনিটে মসজিদের উত্তর পাশের একটি গেট বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। ওই সময় একজন নিরাপত্তারক্ষী গেটটি বন্ধ করে দিলে নামাজ পড়তে আসা একদল মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

ওই নিরাপত্তারক্ষীকে ধাওয়া দেন উত্তেজিত লোকজন। ইসলামী ফাউন্ডেশনের গেটের দিকে ছুটলে নিরাপত্তারক্ষীকে রক্ষা করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। পরে বন্ধ করে দেয়া গেটের তালা ইট দিয়ে ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা।

নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই একটি দল মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় হয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের বাধায় পড়তে হয় তাদের। এর পরপরই বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। জবাবে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একপর্যায়ে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।

এ বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার বায়েজিদুর রহমান বলেন, ‘উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের একটি দল মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে পল্টন হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে আসে। এ সময় তাদের পুলিশ ব্যারিকেড দেয়।’

‘পুলিশি বাধা অতিক্রম করতে তারা ইটপাটকেল ও লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালান। আক্রমণ প্রতিহত করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।’

তিনি জানান, বিক্ষোভকারীদের হামলায় অন্তত ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে তিন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। পাশাপাশি পল্টন মোড় থেকেও একজনকে আটক করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বেলা আড়াইটা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যান চলাচলও শুরু হয় বন্ধ থাকা সড়কটিতে।

কুমিল্লার ঘটনা ও দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীকে কেন্দ্র করে জুমার নামাজের পর যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে জন্য সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.