পরীমণির রিমান্ড: বিচারকদের কাছে ফের ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট

চিত্রনায়িকা পরীমণিকে মাদক মামলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুরকারী দুই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবারও ব্যাখ্যা তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকেও ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, দু’জনই অল্পবয়সী অফিসার। যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে তারা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তারা এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, তাহলে তারা আবারও ব্যাখ্যা দিক। সেজন্য ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হলো।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা দুই বিচারকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলামের দাখিলকৃত ব্যাখ্যা পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বলেছিলেন, দুই বিচারক কী ব্যাখ্যা দিয়েছে তা একটু শোনাতে চাই। ‘রাষ্ট্র মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। অত্র মামলার আসামি সামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণি বিদেশি মদ, এলএসডি আইসসহ গ্রেফতার হন।’

এ সময় আদালত জানতে চান, এলএসডি বিদেশি মাদক রাখার সাজা কত বছরের? জবাবে আইনজীবীরা বলেন, ৫ বছর।

তারপর হাইকোর্ট বলেছিলেন, তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের গাইড লাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে সে। তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডের বিষয়ে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ কারণে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর রাখলাম। তদন্ত কর্মকর্তা সিডি (মামলার নথি) দাখিল করেছে। সেটি আমরা গ্রহণ করেছি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৫ আগস্ট পরীমণি ও দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ। পরে দ্বিতীয় দফায় গত ১০ আগস্ট পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। এরপর তৃতীয় দফায় গত ১৯ আগস্ট পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম।

পরে গত ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রায় না মেনে মাদক মামলায় আটক চিত্রনায়িকা পরীমণিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের স্ব-প্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করে একটি আবেদন করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন জানান।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুরকারী বিচারকদের ব্যাখ্যা ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.