ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ শিশুকে সাজা: নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমা প্রার্থনা

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে অঙ্গীকার করা হয়েছে। ওই সাজার ঘটনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যায় ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়া হয়। আবেদনটির একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি দাখিল করার এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার আবেদনটি দাখিল করেন। এ সময় মামলার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। শুনানি শেষে কার্যালয়ে বসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা না করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। শুধু ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলা হয়।

একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্পর্কে পর্যবেক্ষণসহ নেত্রকোনার ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেওয়ার ঘটনাটি নিষ্পত্তি করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আইন প্রয়োগের ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের আরো সতর্ক হওয়া দরকার। সংশ্লিষ্ট আইনের বিষয় যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা দরকার। পাশাপাশি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে করা নেত্রকোনার আটপাড়ার সহকারী কমিশনার সুলতানা রাজিয়ার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনটি এডিএম নিষ্পত্তি করবেন বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ৫ আগস্ট উক্ত ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়ার ব্যাখ্যার একটি অনুলিপিও দাখিল করতে বলা হয়েছিল। সে আদেশের ধারাবাহিকতায় আবেদনটি হাইকোর্টে তুলে ধরে হয়।

প্রসঙ্গত, দুই শিশুর মুক্তির বিষয়ে হাইকোর্ট বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি চিঠিতে জানিয়েছিলেন, ৪ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে জানতে পারি, নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের সাজা দিয়েছেন। এই প্রতিবেদন পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। শিশু আইনের অধীন ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোনও এখতিয়ার নেই। ফলে, অত্র সাজা এখতিয়ার বহির্ভূত। ওই চিঠি আমলে নিয়ে দুই শিশুকে হাইকোর্টের আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.