বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের মরদেহ দেশে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০২৬ ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর আলীসহ বিমানের কর্মকর্তারা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এ সময় বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বিমানের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল, বিমানের পরিচালক জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মো. মাহবুব জাহান খান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলটস এসোসিয়েশন (বাপা) সভাপতি মাহববুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দোহা থেকে আসা একটি ফ্লাইট দেশে ফেরার পথে ভারতের নাগপুর থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ নিয়ে এসেছে। একই ফ্লাইটে তার দুই বোনও দেশে এসেছেন।
জানা গেছে, দুপুরে বিমানের প্রধান কার্যালয়ে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইট নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে ফ্লাইটটিকে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে ফ্লাইটের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ফ্লাইটটিকে নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলট ক্যাপ্টেন মুস্তাকিম ফ্লাইটটি অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটির এই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন।
পরে জানা যায়, পাইলট নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাকে ভর্তি করানো হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে। এক পর্যায়ে তিনি কোমায় চলে যান। পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট মারা যান নওশাদ।
নওশাদ আতাউল কাইউম ১৯৭৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর ক্যাডেট পাইলট হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে কাজে যোগদান করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এফ-২৮ এর ফার্স্ট অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ২০০৬ সালের ১৪ মে এয়ারবাস-এ-৩১০ উড়োজাহাজের ফার্স্ট অফিসার এবং ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বোয়িং ৭৭৭ এর ফার্স্ট অফিসার হন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বোয়িং ৭৩৭ এর ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তিনি এ পদেই কর্মরত ছিলেন।
তারা বাবা আব্দুল কাইয়ুমও একসময় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ডিসি-১০ উড়োজাহাজের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় ‘কোরিয়ান এয়ার’ এবং ‘সৌদি এয়ারলাইন্সেও’ দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র এই পাইলট। ৬ মাস আগে নওশাদের বাবা আব্দুল কাইয়ুম মারা যান। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলটস এসোসিয়েশন (বাপা) সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শোক জানিয়েছেন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.