আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর সরকার গঠনে তোড়জোড় শুরু করেছে তালেবান। এ প্রেক্ষাপটে কাবুল থেকে বিভিন্ন দেশের নাগরিক ও তাদের আফগান সহকর্মীদের দ্রুত সরিয়ে আনার মধ্যে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ব্যাপক জনস্রোত ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে তালেবান যোদ্ধারা।
এদিকে কাবুল বিমানবন্দরে গত রোববার থেকে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির নিয়ন্ত্রণে নেওয়া তালেবানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ভিড়ের মধ্যে পরে অথবা গুলিতে নিহত হন ওই ব্যক্তিরা। বিমানবন্দরে এখনও হাজার হাজার মানুষ দেশ ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫ হাজার জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে। বিমানবন্দরটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। কারণ গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অভিযানে সহায়তা করা আফগানরাসহ হাজার হাজার মানুষ কাবুল ছাড়ার জন্য উদগ্রীব।
বিমানবন্দরের চারদিকে মোতায়েন করা তালেবান যোদ্ধারা আফগানদের কাগজপত্র ছাড়া বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমেরিকার পাসপোর্ট যাদের আছে, তাদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এখন বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা চলতি মাসের মধ্যেই অন্তত ৩০ হাজার জনকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। লোকজনের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের গুলি ছুড়তে হয়েছে বলে বুধবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন।
তিনি বলেছেন, প্রায় সাড়ে চার হাজার সেনা এখন বিমানবন্দরে আছে এবং আরও কয়েকশ সেখানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। যত বেশি সম্ভব লোকজনকে আফগানিস্তান থেকে বের করার বাধ্যবাধকতা আমাদের আছে। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ হাজার জনকে সরিয়ে নেওয়া। এখনও অন্তত ১১ হাজার আমেরিকান আফগানিস্তানে আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২৫ জন আমেরিকানসহ অন্তত দু’হাজার ব্যক্তিকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আফগানিস্তান এখন পুরোপুরি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। শিগগিরই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে তারা। এরইমধ্যে বেশিরভাগ অফিস আদালত, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বড় ভবনগুলোতে টানানো হয়েছে তালেবানের সাদা পতাকা। শহরে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছে চেক পোস্ট। এদিকে অন্তত ১৫টি দেশ কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে কাবুলে বিমান পাঠিয়েছে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.