আইনমন্ত্রী ও ইনুকে নিয়ে যা বললেন রিজভী

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা, মানি লন্ডারিং ও করোনায় মৃত্যুসহ হাজারো ব্যর্থতা ঢাকতেই শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগ স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রিজভী।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপোলো প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, আজকে করোনা মোকাবিলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে হেল্প সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় এবং এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে বিএনপি সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। যদিও বিএনপিকে প্রতিনিয়ত দমন-পীড়নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তবুও নেতাকর্মীরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে করোনা মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। আর এই কর্মকাণ্ডে পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।  তারেক রহমানের নির্দেশে ঝড়-ঝাপটা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। কারণ বিএনপি জনবান্ধব রাজনৈতিক দল।

তিনি বলেন, আজকে বর্তমানে গড়ে সরকারি হিসেবে আড়াইশো লোক মারা যাচ্ছে। আর এমন সময় সরকার লকডাউন তুলে দিল। এখন দেখতে হবে সরকারের উপদেষ্টা কারা? কার পরামর্শে তারা এসব করল- সেটা দেখার অপেক্ষায়। তারা যে দেশ নিয়ে উদাসীন তার প্রমাণ হলো পৌনে দুই বছর সময় পেলেও তারা চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি। কোনো সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হাসপাতালে বেড সংকট, অক্সিজেন সিলিন্ডার সংকট। গোটা দেশ আজ গোরস্থানে পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, আজকে আইনমন্ত্রী নির্লজ্জ দালালি করছেন। তিনি বলেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে নাকি জিয়া জড়িত! আসলে ওয়ান ইলেভেনে আইনমন্ত্রী যা করেছেন তার বিনিময়ে তাকে আইনমন্ত্রী করা হয়েছে। আজকে জিয়াউর রহমান দেশের বীরমুক্তিযোদ্ধা ও জাতির গর্ব, যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনেছেন। আজকে মন্ত্রিত্ব অটুট রাখতে আইনমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোসাহেবী করছেন। কারণ তারা করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ বলেই মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অবান্তর কথা বলছেন। আসলে নিশিরাতের সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো কাণ্ডজ্ঞান থাকে না। তারই প্রমাণ হলো আইনমন্ত্রীর বক্তব্য। তার কোনো ইতিহাস জ্ঞান আছে কি না, সেই প্রশ্ন করলাম।

রিজভী আরও বলেন, সরকারের চারিদিকের ব্যর্থতা, নৈরাজ্য ঢাকার জন্যই আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। কই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী যে দাবি তুললেন খন্দকার মোশতাকের কেবিনেটে যিনি শপথ পাঠ করালেন সেই এইচটি ইমামের বিচার তো করলেন না? ১৫ আগস্ট রাত পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভার ২২ জন সদস্য খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন। কই তাদের বিরুদ্ধেও তো আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। একটা টু শব্দ পর্যন্ত করেননি। কারণ আপনারা চোখ দিয়ে শোনেন নাকি কান দিয়ে দেখেন?

তিনি বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যতই কথা বলবেন ততই তার জনপ্রিয়তা বাড়ছে এবং বাড়বে।  কারণ তিনি মানুষের বাকস্বাধীনতা দিয়েছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন।  তার যত অর্জন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে এবং থাকবে।

রিজভী বলেন, আজকে হাসানুল হক ইনু আবারও বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তিনি এমন একজনের সম্পর্কে কথা বললেন, যিনি দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী। তার আত্মার সঙ্গে তো এ দেশের মানুষের নাড়ির সম্পর্ক।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনো দেশের মানুষের কাছে গর্বের এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির অতন্দ্র প্রহরী। তাকে মাইনাস টু ফর্মুলা দিয়ে বিদায় করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, কিন্তু সম্ভব হয়নি। কারণ তিনি বাংলাদেশের মানুষের আত্মা ধারণ করেন। আর ইনু যে আত্মা ধারণ করেন তা অত্যন্ত ভয়ংকর। কারণ আপনার আত্মা রক্তের নেশায় উন্মত্ত। তারা চামচামী করার জন্য হয়তো ফের মন্ত্রিত্ব পাবার আশায় এসব বাজে কথা বলছেন।  আমি আইনমন্ত্রী ও হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.