তালেবানের দখলে জার্মান সেনা ঘাঁটি

দীর্ঘ ১০ বছর কুন্দুজে জার্মান সেনার ঘাঁটি ছিল। এখন তা তালেবানের হাতে। জার্মানি জানিয়েছে, কোনোভাবেই তারা সেনা ফেরত পাঠাবে না। তালেবান কুন্দুজ দখল করার পর কোনো কোনো মহলে আলোচনা শুরু হয়েছিল যে, জার্মানি ফের সেখানে সেনা পাঠাতে পারে। কারণ কুন্দুজ জার্মানির দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি ছিল। গত জুন মাসে সেখান থেকে শেষ জার্মান সেনাকে ফেরত আনা হয়।

কিন্তু জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী একাধিক টুইট করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত জার্মান সেনা ফেরত পাঠানোর প্রশ্ন নেই। তবে যেভাবে আমেরিকার নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে, তার সমালোচনা করেছেন তিনি।

আফগানিস্তানের একাধিক আঞ্চলিক রাজধানী এখন তালেবানের হাতে। রোববারের পর সোমবারও তারা উত্তর আফগানিস্তানে আরো অগ্রসর হয়েছে। কুন্দুজ অবশ্য তারা শনি-রোববারেই দখল করেছিল। উত্তর আফগানিস্তান থেকে কাবুল ঢোকার গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট কুন্দুজ। এখানেই দীর্ঘ ১০ বছর জার্মান সেনার ঘাঁটি ছিল। গত দশ বছরে জার্মান সেনা এই অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের আধিপত্যে রেখেছিল। কুন্দুজ দখল করা মানে কাবুলের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তালেবান।

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল, জার্মানি ফের কুন্দুজে সেনা পাঠাতে পারে। আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘কুন্দুজ সহ গোটা আফগানিস্তান থেকে যে রিপোর্ট আসছে, তা দুঃখজনক। বহু জার্মান সেনা রক্ত দিয়ে কুন্দুজকে রক্ষা করেছিল। আমরা ওখানে অনেক লড়াই করেছি।’ জার্মানি ওই অঞ্চলে কত ভালো কাজ করেছে, তার তালিকা দিয়ে মন্ত্রী বর্তমান সময়ে ফিরেছেন। তার বক্তব্য, ‘এতদিনের পরিশ্রম নষ্ট হয়েছে। এই ঘটনা থেকে ভবিষ্যতে বিদেশে কোনো মিশনে গেলে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’

জার্মানি সেনা ফেরত পাঠাবে কি না, এই প্রশ্নের ঘুরিয়ে জবাব দিয়েছেন মন্ত্রী। তার বক্তব্য, জার্মান পার্লামেন্ট কি পুরো এক প্রজন্মের জন্য আফগানিস্তানে সেনা পাঠাতে পারবে? যদি না পারে, তাহলে সেনা ফেরত ফেরত আনার পরিকল্পনাই ঠিক ছিল। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, তালেবানকে ধ্বংস করার জন্য আরো লম্বা সময়ের প্রয়োজন ছিল। বাস্তবে যে সময় পাওয়া যায়নি।

বাস্তব পরিস্থিতির জন্য জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে আঙুল তুলেছেন। তার বক্তব্য, ট্রাম্প যদি তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা না করতেন, তাহলে পরিস্থিতি আজ এমন হতো না।

অগাস্টের মধ্যে আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা সরিয়ে নেবে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের ধারণা, ওই সময় পর্যন্ত তালেবান কাবুলের দিকে যাবে না। তবে যেভাবে তারা এগোচ্ছে, তাতে কিছুদিনের মধ্যেই তারা কাবুল দখল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আমেরিকা, রাশিয়াসহ বিশ্বের একাধিক দেশ তালেবানকে জানিয়েছে, লড়াই বন্ধ করে রাজনৈতিক সমঝোতায় আসতে। কিন্তু যে গতিতে তালেবান আফগানিস্তানের আঞ্চলিক রাজধানীগুলো দখল করছে, তাতে এখন তারা রাজনৈতিক সমঝোতায় যাবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, ডিপিএ, এপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.