হাসপাতালে জায়গা নেই, হোটেল খুঁজছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

হাসপাতালে আসন সঙ্কট দেখা দেওয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা সরকার করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, সবার হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না। সেসব রোগীর জন্য আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি, সেখানে ওষুধপত্র, ডাক্তার-নার্স থাকবে। কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখব। কারণ হাসপাতালের আর জায়গা নেই, হাসপাতাল খালিও নেই। এজন্য হোটেল খুঁজছি।

আজ মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) সচিবালয়ে বিধিনিষেধ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সিট ভর্তি হয়ে গেছে, রোগী আছে সিট ফাঁকা নাই। আইসিইউ অলরেডি ৯৫ শতাংশ অকুপাইড। এই চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। সেটার কাজ চলমান। সেখানে ইমিডিয়েটলি আমরা হয়তো ৫০০-৬০০ বেড রেডি করতে পারব। পরে তা এক হাজার বেডে নেওয়া যাবে।

আগামী ৭ আগস্ট থেকে সাত দিনের জন্য বাংলাদেশ প্রত্যেকটি ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই সাত দিনে আমরা প্রায় এক কোটি টাকা দেব। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।

তিনি বলেন, সেই টিকা দিতে অনেকের সহযোগিতা লাগবে। এজন্য আজ সভা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বাহিনী প্রধানদের কাছে সেই সাহায্য চাওয়া হয়েছে। গ্রামের বয়স্ক অর্থাৎ ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকার দেব। কারণ তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৮০-৯০ শতাংশ। আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। এ মাসে আরও এক কোটি টিকা এসে পৌঁছাবে। যাদের এনআইডি কার্ড নেই তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেব।

সভায় স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদন করার বিষয়ে জোন করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেই টিকা উৎপাদন করার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও পেয়েছি।

তিনি বলেন, পাশাপাশি আরেকটি জিনিসের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে- ভ্যাকসিনের পাশাপাশি মাস্ক পরিধান করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি এটাকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই, এনফোর্স করতে চাই, পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যাতে যারা মাস্ক পরবে না তাদের কিছুটা হলেও শাস্তি দিতে পারে, জরিমানা করতে পারে। একটি অধ্যাদেশ লাগবে। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা হয়তোবা সেদিকে যাব।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ইতোমধ্যে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে ধীরে ধীরে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হবে। ট্রান্সপোর্ট, দোকানপাটও খুলবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা আপনারা পরে পেয়ে যাবেন।

প্রসঙ্গত, সভায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.