কোরবানি ঈদেও অন্ধকার কাটছে না কামারদের

করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব নির্মূলে সরকার ঘোষিত লকডাউনে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। এর মাঝে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি আশার আলো দেখছিলেন কামার শ্রেণীর পেশাজীবীরা, কিন্তু ঈদের আগে তাদের আশার আলো অন্ধকারে পরিণত হয়েছে।

গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী বাজার, ভাওয়াল মির্জাপুর বাজারের কামার ফরিদ উদ্দিন জানান, আমাদের আশা ছিল, লকডাউনে আমাদের আয় উপার্জন বন্ধ থাকায় ঈদে আমরা মোটামুটি উপার্জন করে পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারবো। কিন্তু আমার ৩৬ বছরের কামারি পেশায় এরকম কম বেচাকেনা আর কখনো হয়নি। আগের তুলনায় শিকিভাগ কাজও এখন হয় না, পরিবার নিয়ে চলাই কষ্টকর হয়ে পড়ছে আমাদের।

পুরো বছরে কোরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকেন কামারেরা কিন্তু দরজায় ঈদ কড়া নাড়লেও কোনো বেচাকেনা নেই। এমনকি দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, ধার করাতেও আসছেনা মানুষ।

বছরের একটা সময় শুধু কোরবানি ঈদে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা চলে কামারের দোকানে। এই সময়টির অপেক্ষায় থাকেন তারা কিন্তু এবছর পুরোটাই ভিন্ন প্রেক্ষাপট।

আরেক কামার রঞ্জিত কর্মকার বলেন, আমাদের তো বছরে একবারই সবচেয়ে বেশি কামাই হয় কোরবানি ঈদে। এরপর সারাবছর টুকটাক যা আয় হয় তা দিয়া আমাদের ভালোই চইলা যায়। করোনা আইছে গরিবদের মারতে। গরিবদের তো আর জমানো টাকা নাই যে বইসা-বইসা খাইবো। আমাগো কাম কইরা খাইতে হয়। বেচাবিক্রি না থাকলে আমাগো কামও থাকবো না, বাঁচতেও পারবো না। আমরা করোনায় মরুম না, আমরা মরুম অভাবে।

ভাওয়াল মির্জাপুর বাজারের ইজারাদার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সবুর জানান, করোনা মহামারির কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আমরাও ভালো নেই, করোনা আসার পর থেকে গত বছর আমরা যে টাকায় ইজারা এনেছি তার অর্ধেক টাকাও আমরা উঠাতে পারিনি। এই বছর তো আমরা হাটই বসাতে পারি নাই, মানুষজন হাটে আসেনা করোনার জন্য, সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা হাট করতে পারি নাই এ বছর। আমাদের সিকি টাকাও উঠবে বলে মনে হয় না।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.