‘ঘাটতি বাড়িয়ে হলেও করোনা টিকা নিশ্চিত করা দরকার’

করোনায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো, জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নাগরিককে টিকা দিতে হবে। তা করতে গিয়ে বাজেটের প্রস্তাবিত বরাদ্দ অপর্যাপ্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তাতে বাজেট ঘাটতি ০.৪ শতাংশ বাড়তে পারে। বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে হলেও তাদের টিকাকরণ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থের সংকট হলে সরকার প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে ঋণ নিতে পারে।

আজ শনিবার (২৬ জুন) দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে মতবিনিময়ে এ অভিমত ব্যক্ত করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের লিড ইকোনমিস্ট রবার্ট শুভ্র গুদা এবং সংস্থার পলিসি অ্যানালিস্ট জিনিয়া শারমিন। পাবলিক ও বেসরকারি মিলিয়ে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে এই অনলাইন মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলি এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সমন্বয়কারি জাহিদ রহমান।

অংশগ্রহণকারি শিক্ষার্থীরা করোনাকালে দারিদ্র্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিতে বরাদ্দের অপ্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে রবার্ট শুভ্র গুদা বলেন যে, এসব কর্মসূচির পরিধি ও মোট বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি চলমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে নতুন নতুন কর্মসূচিও নেয়া দরকার। প্রবাস থেকে দেশে ফেরা এবং কাজ হারিয়ে শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে যেন গ্রামেই অর্থনৈতিক কর্মকা-ে যুক্ত করা যায় তা নিয়ে ভাবা দরকার। বিপাকে পড়া এ মানুষদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদাও চাঙ্গা থাকবে এবং এর সুফল পুরো অর্থনীতিই পাবে বলে তিনি মনে করেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে জিনিয়া শারমিন বলেন যে, মহামারিকালিন পরিস্থিতেও যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে আছে সেটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সক্ষমতাই প্রমাণ করে। তবে এই গ্র্যাজুয়েশনে কতো সময় লাগবে সেটি নিয়ে না ভেবে এখন মানুষকে সুরক্ষা দেয়াটি নিয়েই নীতি-নির্ধারকরা ভাবছেন বলে মনে হয়। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে যথোপযুক্ত সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এখন থেকেই সার্বজনীন পেনশন স্কিম এবং স্বাস্থ্য বীমা নিয়ে ভাবা দরকার বলে তিনি মত দেন।

সমাপনী বক্তব্যে খন্দকার সাখাওয়াত আলি বলেন যে, অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশও করোনার কারণে একটি বিশেষ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে নীতি-নির্ধাকরা গতানুগতিক বাজেট প্রণয়ন করবেন না- সেটিই প্রত্যাশিত। আমাদের অবশ্যই কার্যকর আর্থ-সামাজিক পুনরুদ্ধারের একটি পথনকশা দাঁড় করাতে হবে। আর এ প্রক্রিয়াটি যতো অংশগ্রহণমূলক করা যাবে ততোই মঙ্গল।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.