টিকা দিতে আসছে, ভয়ে আমবাগান-পাটক্ষেতে পালাল গোটা পাড়া!

ভারতে করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির মধ্যেও দেশটির গ্রামের দিকে কিছু জায়গায় এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে এখনো অসচেতনতা বিরাজ করছে। এমনকি টিকা নিতেও অনীহা তাদের। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর গ্রামে এমনই এক ঘটনা সবাইকে হতবাক করেছে।

টিকা দিতে আসছে নাকি? ‘ভয়ের চোটে’ বাড়িতে তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয় গোটা একটা পাড়ার সব ক’টা পরিবার। হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর গ্রামের ওই পাড়ার লোকজনের এই ভূমিকায় হতবাক স্থানীয় পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও।

সম্প্রতি হরিহরপাড়ার ধরমপুর পঞ্চায়েতও এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

সোমবার (২৪ মে) সকালে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অসমিতা ফেরদৌস-সহ একটি বিশেষ দল সচেতনতা প্রচারের লক্ষ্যে সুন্দলপুর গ্রামে পৌঁছয়। মুহূর্তের মধ্যে চাউর হয়ে যায়, স্বাস্থ্যকর্মীরা পুলিশ নিয়ে করোনার টিকা দিতে এসেছে। হুলুস্থুল পড়ে যায় গ্রামে। টিকা নেওয়ার ভয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে গ্রামের একটি পাড়ার সমস্ত বাসিন্দা পালাতে শুরু করেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই পাড়ার কেউ পালিয়ে যান নদীর ধারে, আমবাগানে, পাট ক্ষেতে, কেউ আবার পাশের গ্রামে। পঞ্চায়েত প্রধান-সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের অনেককেই বুঝিয়েসুজিয়ে শেষে গ্রামে নিয়ে আসেন। তবে সেই কাজ করতে তাদের ঘাম ছুটে যায়।

প্রশাসন সূত্রে খবর, কী ভাবে করোনা ছড়ায়, এই সংক্রমণ আটকাতে কী করণীয়, বিধিনিষেধ মেনে চলা, মাস্ক-স্যানিটাইজারের ব্যবহার— এই সব নিয়ে তাদের বোঝানো হয়। টিকাকরণ কতটা জরুরি, তা-ও গ্রামের বাসিন্দাদের বোঝান স্বাস্থ্য কর্মীরা। গ্রামেরই বছর পঁয়তাল্লিশের বাবলু শেখ বলেন, শুনছি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলেই করোনা ধরা পড়ছে। সেই ভয়ে আমরা হাসপাতাল যাই না।

রকেন মণ্ডল বলেন, টিকা দিলে নাকি নানা অসুবিধে হয়। সেই ভয়েই পালিয়ে গিয়েছিলাম। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, এ ভাবে গ্রামের মানুষ বাড়ি তালা বন্ধ করে পালিয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.