ইসরায়েলের স্বাগত বার্তার জবাবে নৃশংসতার নিন্দা জানাল ঢাকা

বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে ইসরায়েলে যাওয়ার ওপর বাংলাদেশ সরকার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বহালই রয়েছে। ই-পাসপোর্টের বৈশ্বিক স্বীকৃত মানের সঙ্গে সাদৃশ্য রাখতে ‘ইসরায়েল ছাড়া সব দেশ ভ্রমণে এই পাসপোর্ট বৈধ’ কথাটি উল্লেখ না থাকায় এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টে (এমআরপি) ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আগের মতোই উল্লেখ থাকছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিষয়টি নিয়ে গতকাল রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশের পাসপোর্টেই ইসরায়েল ভ্রমণ করা যাবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। অন্য দেশগুলোর ই-পাসপোর্ট মানের সঙ্গে সাদৃশ্য আনতে কয়েক মাস আগে ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ভ্রমণ করা যাবে না’ বাক্যটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই বাক্য বাদ দেওয়ার অর্থ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন নয় বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে আমরা স্বীকৃতি দিইনি, দেব না।

এদিকে বাংলাদেশের ই-পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ না থাকাকে স্বাগত জানিয়ে টুইট বার্তা দিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হচ্ছে বা বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েলে যাওয়া যাবে—বিভিন্ন মহলের এমন জল্পনাকল্পনাও শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশের নতুন ই-পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া সব দেশ’ লেখা না থাকায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে গিয়ে ওই লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বাংলাদেশের নীতিগত কোনো পরিবর্তনের প্রতিফলন নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েলে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা অপরিবর্তিত থাকছে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েল বিষয়ে তার অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়নি, বরং এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুসৃত জোরালো অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি বাহিনীকে ‘দখলদার’ হিসেবে উল্লেখ করে আল-আকসা মসজিদ চত্বর ও গাজায় বেসামরিক জনগণের ওপর সাম্প্রতিক নৃশংসতার নিন্দা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান এবং পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী—এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তার নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে।

সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্রগুলো বলছে, ই-পাসপোর্টে ব্যক্তির তথ্য ছাড়া বাড়তি কোনো তথ্য রাখার সুযোগ নেই। ই-পাসপোর্টে ইসরায়েলের বিষয়টি না রাখার সিদ্ধান্ত এক বছর আগের। এখন বিদেশ থেকে ছাপা হয়ে যেসব ই-পাসপোর্ট আসছে, তাতে ওই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.