অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল ও রোজিনার মুক্তি দাবি জাপার

দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।

তিনি বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও তার বিরুদ্ধে মামলার প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রোজিনা ইসলামের জামিন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলা বন্ধ এবং দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জিএম কাদের বলেন, দৈনিক প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে বর্বরতা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। একজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহ করবেন, এতে অপরাধের কিছু নেই। অনুসন্ধানী প্রতিবেদকদের জন্যই আমরা জানতে পারি বিভিন্ন দফতরে লুটপাটের খবর।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, করোনাকালে মাস্ক, পিপিই, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরাই জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। আবার করোনা টিকা আমদানি করে একটি কোম্পানি ইতোমধ্যেই ৫০ কোটি টাকা লোপাট করেছে। বর্তমানে টিকা আমদানিতে কী হচ্ছে আমরা জানি না। রোজিনা ইসলাম তার পেশার স্বার্থেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। জাতিকে জানাতে এবং দেশের স্বার্থেই তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তথ্য সংগ্রহ কখনো চুরি হতে পারে না।

বিরোধী দলীয় এই উপনেতা বলেন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালো আইন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিবর্তনমূলক এ আইনটি পাস করে। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন কালো আইন জনস্বার্থ বিরোধী।

‘সরকার যখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করে, সে সময় আমরা জনগণের পক্ষ থেকে দাবি করেছিলাম যে, রাষ্ট্রবিরোধী ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরুপ সে সমস্ত তথ্যই শুধু গোপন রাখার ব্যবস্থা রেখে আর সব তথ্য উন্মুক্ত রাখা জনস্বার্থে প্রয়োজন। এখন প্রতীয়মান হচ্ছে, তথ্য অধিকার আইনটি শেষ পর্যন্ত সেভাবে প্রণয়ন করা হয়নি। বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনটিও উপনিবেশিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অর্থাৎ সরকার এবং জনগণ রাজা ও প্রজা এ ধারণাটিকে লালন করা হচ্ছে। আমরা এর ঘোর বিরোধিতা করছি। তথ্য অধিকার আইনকে যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করার দাবি জানাচ্ছি।’

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হামলার সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী নিয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে শক্তি প্রয়োগ করে নিবৃত করতে হবে ইসরায়েলকে। আলোচনার ভিত্তিতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের উদ্যোগ নিতে হবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.