বুধ নয়, বৃহস্পতিবার থেকে ঈদের ছুটি

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি বৃহস্পতিবার (১৩ মে) থেকে শুরু হচ্ছে। তাই ঈদের আগে আগামীকাল বুধবার হচ্ছে শেষ কর্মদিবস। তবে গত ৫ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা লকডাউন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ১২ মে থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে আভাস দেওয়া হয়। তাছাড়া এবার ২৯ রোজা হলে ১৩ মে ঈদ হতে পারে। সে হিসেবেও ছুটি ১২ তারিখ থেকেই শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সরকারের বার্ষিক ছুটি সংক্রান্ত ক্যালেন্ডারে ১৩ মে থেকে ঈদের ছুটির উল্লেখ আছে। আর এটিকে কেন্দ্র করেই বিভ্রান্তি শুরু হয় ছুটি নিয়ে।

ছুটি নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার জন্য জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। তবে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন একাধিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামীকাল অফিস খোলা থাকবে।’ তার অর্থ ছুটি শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। সচিব অবশ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছুটি সম্পর্কে কিছু বলেননি।

এদিকে জনপ্রশাষন মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২৯ রোজা শেষে ঈদ হবে ধরে নিলে যে কাল থেকেই ঈদের ছুটি শুরু হওয়া উচিত সেটি তারা বুঝতে পারছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই আগামীকাল সরকারি অফিস খোলা রাখা হচ্ছে।

যদি শেষ পর্যন্ত এবার ২৯ রোজা শেষে ঈদ হয় তাহলে অসংখ্য মানুষকে বেশ বিপদে পড়তে হবে। সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত জানার পর, বাড়িতে গিয়ে ঈদ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। সরকার সম্ভবত এটিই চাচ্ছে। কারনোর বিস্তার রোধে সরকার এবার গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে ঈদ করার জন্য দেশবাসীকে বার বার আহ্বান জানাচ্ছে।

নিয়মানুযায়ী, রমজান মাস ২৯ দিনে শেষ হলে তিন দিন আর ৩০ দিনে শেষ হলে ঈদের ছুটি থাকে চার দিন। তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে কর্মজীবীদের কর্মস্থল ত্যাগ ঠেকাতে তিনদিন ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এক্ষেত্রে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার এই তিনদিন ঈদের ছুটি থাকবে।

এদিকে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান বিধিনিষেধ (লকডাউন) বহাল থাকবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত।

বিধিনিষেধের নির্দেশনা অনুযায়ী, জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। সীমিত পরিসরে হয়েছে ব্যাংক লেনদেন। জেলার মধ্যে চলছে বাস। আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। বন্ধ আছে ট্রেন ও লঞ্চ। খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে।

বিধিনিষেধের শুরুর দিকে সরকারি অফিস বন্ধের সিদ্ধান্ত জোরালোভাবে কার্যকর ছিল। গত ৫ মে থেকে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পর থেকে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম বেড়েছে। তাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি বেড়েছে।

গত ৫ মে’র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের ছুটিতে বাধ্যতামূলকভাবে কর্মস্থলে থাকতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন।

এর আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, এবার ঈদের ছুটি তিন দিনের বেশি দেওয়া হবে না। আর এ ছুটিতে কর্মস্থলও ত্যাগ করা যাবে না। এ সিদ্ধান্ত সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও শিল্প-কারখানার কর্মরতদের জন্য প্রযোজ্য।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার ছুটি তিন দিনই থাকছে। কেউ এর বাইরে ছুটি দিতে পারবে না, এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সবক্ষেত্রে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

ঢাকা করোনার উচ্চ সংক্রমণশীল এলাকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রমিকরা যদি ঈদের সময় অন্য জায়গায় চলে যায় তবে ম্যাসাকার হবে। সেজন্য আমরা চাচ্ছি সবাই কর্মস্থলেই থাকুক। লোকজন মুভ করলে করোনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.