রাবিতে নিয়োগ নিয়ে তুলকালাম, পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ছাড়লেন ভিসি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত তিনজন কর্মকর্তা মহানগর ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (০৬ মে) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আজ উপাচার্য আবদুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন। সকাল থেকেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি দেখা যায়। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে উপাচার্যের বাসভবন ছেড়ে চলে যান।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে।

দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসেন। এরপর তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুনুর রশীদ ১২২ জন চাকরি প্রত্যাশীর নিয়োগ নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসছেন। এমন খবর পেয়ে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে মারধর করেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় চলতে থাকে সংঘর্ষ। পরে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে চলে গেছেন।

মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সিয়াম আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নতুন রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অ্যাডহক নিয়োগের ব্যবস্থা চলছে শুনে আমরা ক্যাম্পাসে নিয়োগ প্রতিহত করতে আসি। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদের সঙ্গে আমরা এটা নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমরা তাকে মারিনি, কিন্তু সেখানে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, উপাচার্য শেষ দিনে নিয়োগ নিয়ে একটা রক্তাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বিদায় নিচ্ছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিহার জোনের এডিসি মো. একরামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এম লুৎফর রহমানকে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.