পশ্চিমবঙ্গে ফ্লপ মোদী–অমিত ম্যাজিক
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছিল বুথফেরত সমীক্ষাতেই। রোববার (০২ মে) সকালে গণনা শুরু হওয়ার পরও তেমনটাই দেখা গেছে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে তৃণমূল ও বিজেপির ব্যবধান ততই বাড়ছে।
এবিপি আনন্দ লাইভের খবর অনুযায়ী, দুপুর ৩টা পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে ২০২টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৮৬টি আসনে। বাম-কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সংযুক্ত মোর্চা এগিয়ে রয়েছে ৪টি আসনে।
মোটামুটিভাবে অর্ধেক রাউন্ডের ভোট গণনা শেষ হয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয়ও পরিষ্কার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায় শুধু হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপিকে ভোট দেয়নি। যে রাজ্যে মোটামুটি ৭৫ শতাংশ হিন্দুর ভোট, সেখানে হিন্দু বাঙালি যদি বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিত, তবে নিঃসন্দেহে বিজেপি এ পর্যায়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকত।
২০১৪ সালের লোকসভা থেকে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হিন্দু ভোট ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৭ শতাংশ হয়েছিল। এই মেরুকরণ ২০২১ সালে আরও তীব্র হবে বলে আশা করা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি ব্যর্থ করে দিয়েছে বাঙালি হিন্দুরা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সঞ্জীব মুখার্জি গণমাধ্যমকে বলেন, পুরোপুরি মেরুকরণের রাজনীতি ব্যর্থ হয়নি। হিন্দুদের একটা বড় অংশ অবশ্যই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, তা না হলে বিজেপি ৩ (২০১৬) থেকে ৮৩-তে (২০২১, এখন পর্যন্ত) পৌঁছাত না। বিজেপি ভালোই ধর্মীয় মেরুকরণ করে ফেলেছে এ রাজ্যে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু অন্য সব রাজ্যের ক্ষেত্রে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর যেটা দেখা গিয়েছিল, সেটা এখানেও দেখা গেল। লোকসভা থেকে বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভোট ১২ থেকে ১৬ শতাংশ কমেছে সব রাজ্যেই। এটা এখানেও খেটেছে।
তবে হিন্দুদের একটা বড় অংশ যে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে, সেটাও অবশ্য স্বীকার করেছেন সঞ্জীব। তার মতে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি অনেকাংশে পাল্টে গেল এ নির্বাচনে। একদিকে একটা হিন্দু ভোটব্যাংক তৈরি হলো, অন্যদিকে তৈরি হলো একটা ধর্মনিরপেক্ষ ভোট। আর বামপন্থী ও কংগ্রেসিরা একেবারে মুছে গেল।
এখনো অবশ্য অর্ধেক গণনা বাকি। গণনা শেষ হওয়ার পরই পুরো চিত্র স্পষ্ট হবে।
অর্থসূচক/কেএসআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.