মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ রোববার (১৮ এপ্রিল) বেলা একটার দিকে তাকে মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানান ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা বিষয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মাওলানা মামুনুল হক।

নরেন্দ্র মোদীর সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যুর হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের দিকেই সন্দেহের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

এছাড়াও সম্প্রতি মামুনুল হক সব থেকে বেশি আলোচনায় আসেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়াকে কেন্দ্র করে। এ ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনা সৃষ্টি করে। মামুনুল হল দাবি করেন ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। গত ৩ এপ্রিল মামুনুল হকের অবরুদ্ধের ঘটনায় তার সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর করে রয়্যাল রিসোর্টে।

রিসোর্টটিতে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৬ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁ থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলা পুলিশ বাদী হয়ে ও অপর মামলাটি আহত এক সাংবাদিক বাদী হয়ে করেছেন।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর থেকে একের পর এক মাওলানা মামুনুল হকের কণ্ঠের মতো অডিও ফাঁস হয়। এসব অডিও ইতোমধ্যে সামাজিকমাধ্যম ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এসব অডিওতে যে কণ্ঠ উঠে এসেছে তা মামুনুল হকের কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া অডিও ফাঁস হয়েছে সেটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ নারী জান্নাত ও তার প্রথম স্ত্রীর কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মামুনুল হকের দাবি করা তার ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ ছেলে আব্দুর রহমান গণমাধ্যমে তার মায়ের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মামুনুল হককে প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উল্লেখ করে নানা অভিযোগ করেন। পরে তিনি তার মা নিখোঁজ এই মর্মে পল্টন থানায় একটি জিডি করেন।

সবশেষ নিজের বোনকে মামুনুল হকের স্ত্রী দাবি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মো. শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি ১১ এপ্রিল একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তার বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপি নিখোঁজ রয়েছেন এই মর্মে জিডি করেছেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.