প্রথমদিনেই বাতিল প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট, বিক্ষোভ

লকডাউনে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য আজ থেকে বিশেষ ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে বিশেষ ফ্লাইট চালুর প্রথমদিনেই বাতিল হলো রিয়াদগামী ফ্লাইট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবাসী কর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

আজ শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে বিমানের ফ্লাইটটি (বিজি-৫০৩৯) সৌদি আরবের রিয়াদের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে সেটি বাতিল করা হয়।

কারণ হিসেবে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, যে সময়ে তারা বিশেষ ফ্লাইটের জন্য বিমান যে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেছে সে সময়ে রিয়াদের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়নি। ফলে ফ্লাইট বাতিল করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, ফ্লাইটটি বাতিল হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এ ঘটনায় তারা বিক্ষোভ করেছেন। এসময় বিমানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও শোনা গেছে তাদের। ওই ফ্লাইটে ৩১৪ জন যাত্রীর সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। তারা দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক।

যাত্রীরা জানান, তারা সব নিয়ম মেনে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদসহ বিমানবন্দরে এসেছিলেণ। কিন্তু শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের বলা হয় যে, ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যেও বিদেশে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া সচল রাখতে বিশেষ ফ্লাইট চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বিমান কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) জানিয়েছিল, রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, দুবাই, আবুধাবী, মাস্কাট, দোহা ও সিংগাপুরের উদ্দেশে এই ফ্লাইটগুলো উড়ে যাবে ১৭ এপ্রিল থেকে। করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশে গত ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই বিধিনিষেধ অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটসহ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

সভার সিদ্ধন্ত অনুযায়ী, ৫টি দেশে গমনেচ্ছু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স রয়েছে, তাদেরকে বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে এসব দেশের ক্ষেত্রে যাদের ভিজিট ভিসা আছে, কিন্তু বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স নেই, তারা বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার পাবেন না। ভিজিট ভিসা নিয়ে যেসব বাংলাদেশি কর্মীর উদ্দেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন, তারা বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন।

সভায় বলা হয়, বিগত তিন দিন ধরে যেসব যাত্রী টিকেট কেনা সত্ত্বেও লকডাউনের কারণে বিদেশ গমন করতে পারেননি, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের অতিরিক্ত বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হবে। যেসব যাত্রী ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম হতে ভ্রমণ করার জন্য টিকেট ক্রয় করেছেন, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কানেকটিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকায় আনা যাবে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিকেটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে যাত্রী পরিবহনের জন্য পরিচালিত বিশেষ ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং চার্জ সাধারণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য চার্জের সমপরিমাণ প্রদেয় হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদফতর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী যাত্রীদের পিসিআর টেস্ট নির্বিঘ্নে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে ফলাফল প্রদান করবে।

লকডাউন চলাকালে উল্লিখিত ৫টি দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে যেতে ইচ্ছুক, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সাপেক্ষে ট্রানজিট-প্যাসেঞ্জার হিসেবে বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.