মিয়ানমারে এক শহরেই ৮২ প্রাণ কেড়ে নিল জান্তা

মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাত থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর চরম দমন–পীড়ন শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। চলে শনিবার (১০ এপ্রিল) বিকেল অবধি। এ সময় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর রাইফেল গ্রেনেড ছোড়া হয়। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮২ বিক্ষোভকারী।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইয়াঙ্গুন থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে বাগো শহরের অবস্থান। শুক্রবার রাতে হঠাৎ উত্তাল হয়ে ওঠে শহরটি। নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহতদের মরদেহ সেনাবাহিনীর ট্রাকে করে স্থানীয় জেয়ার মুনি প্যাগোডায় নিয়ে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা এখনো সুস্পষ্ট নয়। তবে এএপিপি ও দেশটির গণমাধ্যম মিয়ানমার নাও জানিয়েছে, গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮২ জন।

বিক্ষোভকারী ইয়ে হুতুত বলেন, তারা (নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা) প্রতিটি ছায়া লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। এটা গণহত্যার শামিল।

সংঘর্ষের ঘটনায় শহর ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই আশপাশের গ্রামগুলোয় আশ্রয় নিয়েছেন। তবে বাগো শহরে সংঘাত ও হতাহতের বিষয়ে জানতে জান্তা প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রায় প্রতিদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।

গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়। পরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার এ পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি মানুষ হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.