রাজধানীতে করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যে দুই এলাকা

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর ও মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় করোনা ভাইরাসের (কোভিড -১৯) সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এই দুই এলাকা বর্তমানে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই দুই থানা এলাকায় শনাক্তের হার যথাক্রমে ৪৬ ও ৪৪ শতাংশ। আর দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশ এবং উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ২৯ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর উদ্যোগে ঢাকা সিটি করপোরেশনের থানাভিত্তিক শনাক্তের এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ২৭ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় এ জরিপ চালানো হয়।

এমআইএস-এর তথ্যমতে, রাজধানীর রূপনগর ও আদাবর এলাকায় করোনা ভাইরাস শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি। কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন এমন মানুষের মধ্যে রূপনগরে ৪৬ শতাংশ এবং আদাবরে ৪৪ শতাংশ মানুষের করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়া আরও ১৭টি থানায় করোনা শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের ওপর।

আইইডিসিআর জানায়, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৩২ জনের। এর মধ্যে কোভিড শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১০৩ জনের। শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশ। আর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ৩৬ হাজার ৭৭১ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ৮৪৩ জন। শনাক্তের হার ২৯ শতাংশ।

তথ্য বলছে, উত্তর সিটির রূপনগর থানা এবং আদাবর থানা এলাকায় করোনার ‘ডেঞ্জার জোন’। এই দুই এলাকার যারা কোভিড পরীক্ষা করিয়েছেন তাদের মধ্যে আক্রান্তের হার অন্যান্য সব এলাকার চেয়ে বেশি। এর মধ্যে রূপনগরে শনাক্তের হার ৪৬ শতাংশ, আদাবর এলাকায় ৪৪ শতাংশ।

এছাড়া ঢাকার অন্য থানাগুলোর মধ্যে ১৭টি এলাকায় করোনা শনাক্তের হার ৩১ শতাংশের বেশি। ২৩টি থানায় ২০ শতাংশের ওপর এবং ৭টি থানায় ১১ শতাংশের ওপরে শনাক্তের হার বলে জানায় আইইডিসিআর।

পরীক্ষা বিবেচনায় ৩১ শতাংশের ওপরে শনাক্তের হার রূপনগর, আদাবর, শাহ্ আলী, রামপুরা, তুরাগ, মিরপুর, কলাবাগান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, চকবাজার, সবুজবাগ, মতিঝিল, দারুসসালাম, খিলগাঁও থানা এলাকায়।

শনাক্তের হার ২১ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে শাহবাগ, বংশাল, লালবাগ, শাহজাহানপুর, রমনা, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর, বাসাবো, বনানী, উত্তরখান, শেরেবাংলা নগর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, পল্লবী, কাফরুল, ডেমরা, ওয়ারী, ভাটারা, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, কদমতলী, উত্তরা পূর্ব থানা ও পল্টন থানা এলাকায়।

আর শনাক্তের হার ১১ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে তেজগাঁও ডেভেলপমেন্ট ও শিল্পাঞ্চল থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা, ভাসানটেক, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট থানা ও বিমানবন্দর থানা এলাকায়।

আইইডিসিআর-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উপদেষ্টা ড. মোশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, কঠোর লকডাউন ছাড়া পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনা কিছুতেই সম্ভব নয়। ১৪ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন পালিত হলে সংক্রমণের হার কমবে বলে আশা করছি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.