সালথায় সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু, আটক ৩

করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ কার্যকর করতে ফরিদপুরের সালথায় লোকজনকে পেটানো হয়েছে- এমন অভিযোগে গতকাল সোমবার (০৫ এপ্রিল) রাতে থানা ও উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় লোকজনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা চত্বরে লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি ও তিনটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

তিন ঘণ্টাব্যাপী এই হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ থেকে রক্ষা পায়নি উপজেলা কমপ্লেক্সের গাছপালা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সালথার পাশাপাশি ফরিদপুর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা থানা পুলিশসহ র‌্যাব, আনসার সদস্যরা ৫৮৮ রাউন্ড শটগানের গুলি, ৩২ রাউন্ড গ্যাস গান, ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড এবং ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছোড়ে।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ সদস্যসহ আহত হন কমপক্ষে ২০ ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে স্থানীয় রামকান্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আশরাফ আলীর ছেলে হাফেজ জুবায়ের হোসেন (২০) নামের এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল ও আশ পাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, করোনাকালের বিধিনিষেধ কার্যকর করতে দুই আনসার সদস্য ও ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে এসি ল্যান্ড মারুফা সুলতানা ফুকরা বাজারে যান। সে সময় চা পান করতে আসা জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে লাঠিপেটা করা হয়েছিল বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে পরে ফুকরা বাজারে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। এমন গুজবে শত শত মানুষ গিয়ে থানা ও উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করে।

সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর অভিযোগ করেন, সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে। একটি গুজব ছড়িয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বিপিএম বলেন, মিথ্যা গুজবেই হামলা চালানো হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তবে আমরা তিনজনকে আটক করেছি। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.