মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিবৃতি আটকে দিয়েছে চীন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসে। তবে চীন সমর্থন না দেওয়ায় তারা যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে, চীন সমর্থন না দেওয়ায় যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। ভেটো ক্ষমতা থাকায় এ ধরনের যে কোনও প্রস্তাব বা বিবৃতি আটকে দিতে পারে দেশটি।
বৈঠক শুরুর আগে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানান জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক দূত ক্রিস্টিন স্ক্রানার। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে নির্বাচনে সু চি-র দলের বিজয়ের কারণেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
এদিকে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান এবং সু চি-র আটকের ঘটনাকে ‘মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল’ বলে আখ্যায়িত করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম সিনহুয়া। ‘নিজেদের মধ্যকার বিরোধ মিটিয়ে’ নিতে মিয়ানমারের সব পক্ষের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশ্লেষক এলিয়ট প্রাসফ্রিম্যান বিবিসিকে বলেন, চীন কৌশলগতভাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে। চীন মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনাকে অভ্যন্তরীণ ইস্যু হিসেবে অভিহিত করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মিয়ানমারের পরিস্থিতিকে ‘মন্ত্রিসভায় রদবদল’ বলেছে। এলিয়ট প্রাসফ্রিম্যান মনে করেন, জাতিসংঘের বিবৃতিতেও মিয়ানমারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
মিয়ানমারের ক্ষমতা এখন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে। দেশটির বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১১ জনমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বদলানো হয়েছে। নতুন নির্বাচন কমিশন ও পুলিশপ্রধান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজনৈতিক নেতা অং সান সু চিসহ কয়েক আইনপ্রণেতাকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পর থেকে অভ্যুত্থান নেতারা একটি সুপ্রিম কাউন্সিল গঠন করেন, যারা মন্ত্রিদের চেয়েও বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
এদিকে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক জোরদার হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে ইয়াঙ্গুনে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গণপ্রতিবাদে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা অমঙ্গল দূর হবে বলে শ্লোগান দেন। রীতি অনুযায়ী অমঙ্গল দূর করতে হাঁড়ি-পাতিল বাজান।
৩০টি শহরের ৭০ হাসপাতাল ও চিকিৎসা বিভাগের কর্মীরা আজ বুধবার কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
নতুন গঠিত সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স আন্দোলনের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে।
তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনা মহামারির সময় মানুষ যখন দুর্ভোগে আছে, তখন ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের কথা না ভেবে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
অর্থসূচক/কেএসআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.