স্মিথের রানে ফেরার দিনে নড়বড়ে অস্ট্রেলিয়া

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালটা ছিল আষ্ট্রেলিয়ার। দুপুর গড়াতেই ধীরে ধীরে দিনের খেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে ভারত। রান খড়া কাটিয়ে ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে নেন স্টিভেন স্মিথ। যোগ্য সঙ্গীর আভাবে বলতে গেলে একাই আষ্ট্রেলিয়াকে টেনে নিয়ে যান তিনি।

২ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া থামে ৩৩৮ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুভমান গিলের স্ট্রোকের ফুলঝুঁড়িতে দিনের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান তুলেছে ভারত। অজিঙ্কা রাহানে ৫ রানে এবং চেতেশ্বর পূজারা ৯ রানে তৃতীয় দিন শুরু করবেন। অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ৩৩৮ রান টপকাতে ভারতের এখনো প্রয়োজন ২৪২ রান।

১৪ ম্যাচের সেঞ্চুরি খরা কাটিয়ে সিডনিতে এদিন ১৩১ রানের ওয়ান ম্যান আর্মি ইনিংস খেলেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ। রবীন্দ্র জাদেজা থ্রোতে রান আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। একই সঙ্গে ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরম্যাটে শতরানের বিচারে ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও ছুঁয়ে ফেলেন।

প্রথম দিনে দুর্দান্ত ব্যাট করা মার্নাস ল্যাবুশেন সেঞ্চুরির দিকে ঝুঁকতে থেকেও ৭ রান কম করে সাজঘরে ফেরেন। জাদেজার ঘূর্ণিতে স্লিপে ক্যাচ হওয়ার আগে তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৯৩। ল্যাবুশেন ফিরে যাওয়ার পর স্মিথকে আর কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। রান আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত একাই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস টেনে নিয়ে যান তিনি।

ওপেনিংয়ে দুই টেস্টের ব্যর্থতার পর মিডল অর্ডারে নেমেও নিজেকে ফিরে পাননি ম্যাথু ওয়েড। ১৩ রান করে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বাজে এক শট খেলেন, ফলশ্রুতিতে জাদেজাকে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর ১ রানের মধ্যেই আরো তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। ক্যামেরুণ গ্রিনকে ০ রান লিগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ১ রান করে বুমরাহ বলেই বোল্ড টিম পেইন। জাদেজার ফ্লাইটেড বল ইয়র্ক বানিয়ে বোল্ড প্যাট কামিন্সও। শেষ দিকে মিচেল স্টার্কের ২৪ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে ৩৩৮ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবথেকে বেশি চারটি উইকেট নেন জাদেজা। অভিষিক্ত নবদ্বীপ সাইনি ও বুমরাহর শিকার দুইটি করে উইকেট।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে সহ অধিনায়ক শর্মা ও গিল ভারতের ইনিংসের শুভ সূচনা করেন। এই দুই ব্যাটসম্যানের ৭০ রানের জুটির মাথায় জস হ্যাজেলউডের বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ দিয়ে ২৬ রান করে ফেরেন রোহিত। গত ম্যাচে অভিষেক ঘটা গিল সেই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ছুঁতে পারেনি। এ ম্যাচে দুর্দান্তসব কাভার ড্রাইভ, ফ্রন্ট ফুট পাঞ্চ আর পুল-হুকে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি।

হাফ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর অবশ্য আর রান করতে পারেননি তিনি। কামিন্সের বলে সিলি পয়েন্টে গ্রিনের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ৫০ রানেই আউট হয়ে যান গিল। দিনের শেষপর্বে কয়েকটি ওভার ক্রিজে টিকে থেকে বাকি দিন কাটিয়ে দেন পূজারা ও রাহানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুইটি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন হ্যাজেলউড এবং কামিন্স।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
অস্ট্রেলিয়া (১ম ইনিংস): ৩৩৮ (১০৫.৪ ওভার) ( ল্যাবুশেন ৯১, স্মিথ ১৩১, ওয়েড ১৩, স্টার্ক ২৪, হেইজেলউড ১*; জাদেজা ৪/৬২, বুমরাহ ২/৬৬, সাইনি ২/৬৫, সিরাজ ১/৬৭ )
ভারত ১ম ইনিংস: ৯৬/২ (৪৫ ওভার) (গিল ৫০, রোহিত ২৬, পুজারা ৯*, রাহানে ৫*; হ্যাজেলউড ১/২৩, কামিন্স ১/১৯)।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.