জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির অন্যতম নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেবের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন এলাকায় শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের অংশ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, গুলির খোসা উদ্ধার এবং ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়। একই সময়ে সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়-যা অর্থপাচার তদন্ত শুরুর ভিত্তি তৈরি করে।
সিআইডি জানায়, দাউদ খান বা রাহুল নামেও পরিচিত ফয়সাল করিম মাসুদ এখনো পলাতক। তবে প্রমাণ গোপন করা এবং তাকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে তার পরিবারের একাধিক সদস্য ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিক ব্যাংক চেকবই জব্দ করে। এসব চেকবইয়ে মোট প্রায় ২১৮ কোটি টাকার অসম্পূর্ণ আর্থিক লেনদেনের তথ্যও রয়েছে।
প্রাথমিক বিশ্লেষণে সিআইডি নিশ্চিত হয়েছে, আসামি ও তার সহযোগীদের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন হিসাবে ১২৭ কোটির বেশি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। এসব লেনদেন অর্থপাচার, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে সংস্থাটি। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা জব্দে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অর্থের মূল উৎস শনাক্তে তদন্ত চলছে।
হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, অর্থায়ন এবং অস্ত্র সরবরাহে কোনো সমন্বিত চক্র জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে সিআইডির একাধিক দল কাজ করছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধী নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে সিআইডি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.