সোয়া ৬ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের ৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সোয়া ছয় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ ৯৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মামলাগুলো হয়েছে। দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক জানায়, তিন মামলায় এস আলম গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান—এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল মিল, এবং এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড—এর নামে ঋণ নিয়ে ৬ হাজার ২৪৩ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম মামলায় এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২ হাজার ৩ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৩০৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কালে এ ঘটনা ঘটেছে। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম মাসুদ, পরিচালক হিসেবে তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন, জনতা ব্যাংকের ২৮ জন কর্মকর্তাসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলায় এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ঋণ নিয়ে ২ হাজার ২৯৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনা ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিলের মধ্যে ঘটেছে। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল আলম মাসুদ, জনতা ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তৃতীয় মামলাটি করা হয়েছে এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ঋণ নিয়ে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫৯৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে। ২০০৫ সালের ১০ মে থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়কালে এ ঘটনার কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম মাসুদ, পরিচালক তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ পরিবারের ৫ সদস্য, জনতা ব্যাংকের ২৬ কর্মকর্তাসহ মোট ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে ১৭ ডিসেম্বর এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়া গত ৯ জুলাই সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। ২৪ জুন বিদেশে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ১৭ জুন ১৮০ কোটি টাকার জমি ক্রোক এবং ১৪ জানুয়ারি গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোকের পাশাপাশি ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.