ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান সিনহা ও তার কন্যা তাসনিম সিনহার দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের দলিলি প্রমাণসহ নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনের সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
দি একমি ল্যাবরেটরিজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কালিয়ার প্যাকেজিং লিঃ এবং কালিয়ার রেপ্লিকা লিঃ-এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিনহা ও তার কন্যা দি একমি ল্যাবরেটরিজের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কালিয়ার প্যাকেজিং লিমিটেড ও কালিয়ার রেপ্লিকা লিঃ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনিম সিনহার বিরুদ্ধে কালিয়ার প্যাকেজিং লিঃ এবং কালিয়ার রেপ্লিকা লিঃ-এর শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক মামুন আর রশিদের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগের কারণে আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায়, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তন, সেগুনবাগিচায় এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মামুন আর রশিদ পারিবারিকভাবে একজন প্রিন্টিং এবং প্যাকেজিং ব্যবসায়ী। রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ১৯৬৮ সালে পিতার প্রতিষ্ঠিত লা সানি আর্ট প্রেস লিমিটেড ঢাকা-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ১৯৮৫ সাল থেকে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে প্রিন্টিং এবং প্যাকেজিং ব্যবসা করে আসছিলেন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, অত্যন্ত লাভজনক দুটি প্রতিষ্ঠানের সুফল থেকে চরম ধূর্ততা ও অপকৌশলে আমাকে ধারাবাহিকভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। দি এক্সি ল্যাবরেটরিজের মিজানুর রহমান সিনহা এবং তার মেয়ে তাসনিম সিনহা প্রতারণামূলক এবং বেআইনি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমার ন্যায্য পাওনা ১৯৯৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ১০২,৯৪,২৮,৯২৬.৭২ (একশ দুই কোটি চুরানব্বই লক্ষ আটাশ হাজার নয়শত দশমিক বাহাত্তর) টাকা আত্মসাৎ করে আমাকে নিদারুণ এক অমানবিক অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
২০১৫ সাল থেকে আমি বার বার আমার ন্যায্য পাওনা চাইতে গিয়ে শুধু ব্যর্থই হইনি, নানাভাবে আমাকে হুমকি-ভয়ভীতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। অন্যদিকে অর্থকষ্টের দরুণ প্রায় মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছি। অর্থের অভাবে আমার মা সঠিক চিকিৎসার অভাবে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি মারা যান। ধার দেনা করে চলার মতো একরকম অমানবিক অবস্থায় পড়ে আজ আমি ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হয়েছি।
ইতিমধ্যে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শে আমি আইনের আশ্রয়ও নিয়েছি। যার অংশ হিসেবে দুটি মামলা- যথাক্রমে হাইকোর্টে (স্মারক-কোম্পানি ম্যাটার ২০২০ এর ২৪০ নম্বর) এবং ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা (সিআর মামলা নং ৬০৮৩/২০২৫) দায়ের করেছি।
আমি চাই, সুশীল বা ভদ্রতার মুখোশ পরে মিজানুর রহমান সিনহার মত প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বা পরিবার কীভাবে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মতো অপরাধ করে যাচ্ছে সেটা উন্মোচিত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে, যাতে অপরাধী লোকচক্ষুর অন্তরালে প্রভাব খাটিয়ে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় ফল না পেয়ে আমি উচ্চ এবং নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করি উভয় আদালতে আমি ন্যায়বিচার পাবো। পাশাপাশি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি এজন্য যে, বিষয়টি গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে চাই। যাতে অগাধ অর্থ ও সামাজিক প্রভাব-প্রতিপত্তির মাধ্যমে মিজানুর রহমান সিনহা তার দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা এবং অপরাধমুলক বিশ্বাসভঙ্গ ধামাচাপা দিতে না পারে। সেই সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে গণমাধ্যমের মানবিক সহযোগিতা কামনা করছি।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মূল অভিযোগকারী জনাব মামুন আর রশিদ। আরো উপস্থিত ছিলেন লিগ্যাল অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট নুরুদ্দিন আহমেদ ও আয়োজক আনোয়ার ফরিদী।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.