মিয়ানমারে হাসপাতালে বিমান হামলায় ৩৩ জন নিহতের দাবি

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের একটি হাসপাতালে বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা বলেছে, হামলায় ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর দাবি, নিহতদের সবাই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্য এবং তাদের সমর্থক। হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের কেউ নিহত হননি।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী, মানবিক সহায়তাকর্মী, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘের দাবি, হাসপাতালে থাকা বেসামরিক মানুষেরাই হামলায় নিহত হয়েছেন।

আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন গণমাধ্যমে সেনাবাহিনীর তথ্য দপ্তরের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে, আরাকান আর্মি, পিপলস ডিফেন্স ফোর্সসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো হাসপাতালটিকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে এবং গত বুধবার ম্রাউক-উ শহরের জেনারেল হাসপাতালে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছে।

জাতিসংঘ বৃহস্পতিবার ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। হাসপাতালটিতে জরুরি চিকিৎসা, প্রসূতি ও শল্যচিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছিল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেসামরিক মানুষ ও বেসামরিক স্থাপনার ওপর বিস্তৃত হামলার অংশ হিসেবে হামলাটি চালানো হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক এই হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এ ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

ফলকার টুর্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য হতে পারে। আমি তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। লড়াই এখনই বন্ধ হতে হবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় মর্মাহত।

এক্সে দেওয়া পোস্টে গেব্রেয়াসুস লিখেছেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী, পরিবারের সদস্যরাসহ কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে, অস্ত্রোপচারের কক্ষ এবং ওয়ার্ড পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

ম্রাউক-উ শহরটি মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৫৩০ কিলোমিটার (৩২৬ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরাকান আর্মি এই রাজ্যের দখল নেয়।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.