৫০০ টাকার নতুন নোট আসছে

আগামী বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে একই সিরিজের ১০০০, ১০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট চালু করেছে। এবার গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা ৫০০ টাকার নোট যুক্ত হচ্ছে প্রচলনে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক প্রেস বিজ্ঞপিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ শীর্ষক নতুন সিরিজের অংশ হিসেবে নোটটি প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু হবে। পরে দেশের অন্যান্য শাখা থেকেও সরবরাহ করা হবে।

৫০০ টাকার নোটটির আকার ১৫২ মিমি × ৬৫ মিমি। রঙে সবুজের আধিক্য রয়েছে। নতুন এই নোটের সামনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি ও ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় ফুল শাপলা, পেছনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবনের ছবি থাকছে। জলছাপে থাকবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ, ‘500’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম।

নোটটিতে মোট ১০ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটের সম্মুখভাগের ডানদিকে কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘৫০০’ রঙ পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত; নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রঙ সবুজ থেকে নীল রঙে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘৫০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়। নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ৪ মিমি. চওড়া লাল রঙ এবং উজ্জ্বল স্বর্ণালী বারের সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে লাল অংশ সবুজ রঙে পরিবর্তিত হবে, যাতে ‘৫০০ টাকা’ খচিত রয়েছে যা আলোর বিপরীতে ধরলে দৃশ্যমান হবে এবং স্বর্ণালী বার অংশ একটি উজ্জল রংধনুর রঙের বারে রূপান্তরিত হয়ে উপর থেকে নিচে চলতে দেখা যাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সম্মুখভাগের ডানদিকে নীচে ৫টি ছোট বৃত্ত রয়েছে যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।

নোটটিতে ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশসমূহ হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভব করা যাবে। ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশসমূহের মধ্যে রয়েছে নোটের সম্মুখভাগের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ ও ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’, বাংলা ও ইংরেজিতে নোটের মূল্যমান, ডানদিকে আড়াআড়িভাবে মুদ্রিত ৬টি লাইন এবং নোটের পেছনভাগে সুপ্রিম কোর্টের ছবি, সকল মূল্যমান (অংকে ও কথায়), বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম, ‘BANGLADESH BANK’ ইত্যাদি। নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার বামপাশে ও ‘BANGLADESH BANK’ লেখাটির নিচে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের পেছনভাগে বামদিকের উপরে ‘৫০০’ এবং নিচে ‘৫০০’ লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘BANGLADESH BANK’ পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে; যা শুধু Magnifying Glass দ্বারা দেখা যাবে।

নোটের সম্মুখভাগে মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে মুদ্রিত পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা UV fluorescence (Magenta) ink দ্বারা মুদ্রিত যা UV detector মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হবে।

নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See-Through image হিসেবে ‘৫০০’ মুদ্রিত রয়েছে যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নীচের দিকের বর্ডারের মাঝখানে সবুজ ডিজাইন অংশে গুপ্তভাবে ‘৫০০’ লেখা আছে; যা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যাবে। নোটের কাগজে লাল, নীল ও সবুজ রঙের অসংখ্য fiber রয়েছে যা UV detector মেশিন দ্বারা দৃশ্যমান হবে। নোটটির উভয় পৃষ্ঠে UV curing varnish সংযোজন করা হয়েছে; ফলে নোটটি চকচকে অনুভূত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নতুন নোট প্রচলনের পরও বর্তমানে ব্যবহৃত সব কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা আগের মতোই চালু থাকবে। মুদ্রা সংগ্রাহকদের জন্য ৫০০ টাকার স্পেসিমেন নোটও ছাপা হয়েছে, যা মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.