রুশ তেল ইস্যুতে আবারও ভারতকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও হুঁশিয়ার করেছেন যে, ভারত যদি রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ না করে, তবে তাদের ওপর “বোঝা বহাল” থাকবে—অর্থাৎ উচ্চ শুল্ক আরোপিত থাকবে।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) প্রেসিডেনশিয়াল উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ান–এ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

ট্রাম্প বলেন, “আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তেল সংক্রান্ত ইস্যুতে আর জড়িত থাকবেন না।”

এর আগেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারত রুশ তেল আমদানি বন্ধে সম্মত হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে সে দাবিকে খণ্ডন করে জানানো হয়, এমন কোনো আলোচনা হয়নি।

এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, “যদি এটা তাদের বক্তব্য হয়, তাহলে তারা ব্যাপক শুল্ক দিয়ে যেতে থাকবে। তবে সেটা তো তারা চায় না।”

ভোক্তা তথ্য সংস্থা কেপলার-এর হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসে ভারতীয় তেল আমদানি দৈনিক ১৯ লাখ ব্যারেল ছাড়াতে পারে, যা প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি। এর পেছনে কারণ হিসেবে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রুশ তেল রিফাইনারিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তেল রফতানির হার বেড়ে যাওয়াকে দেখানো হয়েছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই সুযোগে ভারত ছাড়যুক্ত দামে রুশ তেলের বৃহৎ আমদানিকারক হয়ে ওঠে।

রুশ তেল আমদানির কারণে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়ার তেল বিক্রির অর্থ ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মূল উৎস, তাই তেল কেনার মাধ্যমে যে কেউ যুদ্ধকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে।

তবে ভারতের একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে এখনো “সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে” আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি দেশে ফিরেছে বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প বলেন, মোদির সঙ্গে তার ফোনালাপ হয়েছে এবং তিনি রুশ তেল আমদানি বন্ধে সম্মতি দিয়েছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওই দিন এমন কোনো ফোনালাপের তথ্য তাদের কাছে নেই।

তারা আরও জানায়, ভারতীয় ভোক্তার স্বার্থ সুরক্ষা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

এদিকে ওয়াশিংটনের এক কর্মকর্তা বলেন, ভারত ইতোমধ্যে রুশ তেল আমদানি প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের জন্য রফতানি চুক্তি ইতোমধ্যে চূড়ান্ত, তাই প্রকৃত প্রভাব দেখা যেতে পারে ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে।

রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ট্রাম্পের শুল্ক হুঁশিয়ারি এবং ভারতের কৌশলগত অবস্থান এ ইস্যুকে আরও জটিল করে তুলছে। যদিও উভয় দেশই কূটনৈতিকভাবে সমঝোতার পথ খোলা রেখেছে, তবে রুশ তেল নিয়ে ভিন্নমত পারস্পরিক সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.