চাকসুতে ভিপি-জিএসসহ ২৪ পদে শিবিরের জয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। ভিপি ও জিএসসহ মোট ২৬ পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয়ী হয়েছেন এ প্যানেলের প্রার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রার্থী-ভোটারদের অংশগ্রহণে পুরো ক্যাম্পাস উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল।

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে মো. ইব্রাহিম হোসেন রনি এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে সাঈদ বিন হাবিব জয়ী হয়েছেন। এ প্যানেলের বাইরে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এবং সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী তামান্না মাহবুব প্রীতি জয় পেয়েছেন।

চাকসুর ১৪টি হলের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট। জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৮ হাজার ৩১ ভোট, আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত হোসেন পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

অন্যদিকে, এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজ্জাদ হোসেন মুন্না পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যার পর ভোটগণনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা বাদে মধ্যরাত থেকে ফলাফলের ঘোষণা আসতে থাকে; যেখানে বেশিরভাগ পদে লড়াই হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের মধ্যে। ফল এসেছে শিবিরের পক্ষেই বেশি।

চাকসু নির্বাচনে ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী এবং হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন।

এ নির্বাচনে ভোট হয়েছে ব্যালট পেপারে, আর গণনা করা হয়েছে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে। ১৪টি এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি ভোট গণনা প্রদর্শন করা হয়।

এবারের নির্বাচনে ২৭ হাজার ৫১৬ ভোটারের মধ্যে ১৭ হাজার ৭১৭ জন ভোট দিয়েছেন, যা মোট ভোটের প্রায় ৬৫ শতাংশ।

নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.