শরীয়াহ কমিটিতে সদস্য হতে শুধু ধর্মজ্ঞান নয়, শিক্ষাগত যোগ্যতাও বাধ্যতামূলক

ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে এবার থেকে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। এত দিন শুধুমাত্র পরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব হওয়াই যথেষ্ট ছিল, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে—কমিটিতে থাকতে হবে শরীয়াহ বা ইসলামিক ফিকহের নির্ভরযোগ্য শিক্ষা ও জ্ঞান।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে জানায়, ইসলামিক ফিকহ, উসুলুল ফিকহ, ইসলামিক ইকোনমিকস বা ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি থাকতে হবে শরীয়াহ কমিটির সদস্যদের। শুধু ডিগ্রিই যথেষ্ট নয়, থাকতে হবে ইসলামিক অর্থনীতি ও ব্যাংকিং-সম্পর্কিত গবেষণা, প্রকাশনা বা সংশ্লিষ্ট কাজে বাস্তব অভিজ্ঞতা।

নতুন নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকে কমপক্ষে ৩ জন ও সর্বোচ্চ ৫ জন সদস্য থাকতে পারবেন। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে কাজ করতে পারবেন। একইসঙ্গে টানা ৬ বছর দায়িত্ব পালন শেষে কমপক্ষে দুই বছর বিরতিতে থাকতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক শরীয়াহ কমিটির ক্ষমতাও বাড়িয়েছে। এখন থেকে কমিটি শুধু পরামর্শ দেবে না, প্রয়োজনে সংশোধনের নির্দেশও দিতে পারবে। এই নির্দেশনা না মানলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।

বর্তমানে দেশে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক এবং বেশ কয়েকটি সাধারণ ব্যাংকের ইসলামী শাখা শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এসব ব্যাংকে শরীয়াহ কমিটি মূলত ব্যাংকিং কার্যক্রম শরীয়াহ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা তদারকি করে এবং নতুন পণ্যের অনুমোদন দেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। এর আগেই সব ব্যাংককে তাদের শরীয়াহ কমিটি পুনর্গঠন করে নতুন নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এই উদ্যোগ ইসলামী ব্যাংকিং খাতে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও শরীয়াহ সম্মত পরিচালনা নিশ্চিত করবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.