৬ মরদেহ পোড়ানোর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সোমবার

বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সাভারের আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের সূচনা বক্তব্য শেষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সূচনা বক্তব্যে তিনি গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার সেই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরেন।

পরে চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়ায় ছয় জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশের ভ্যানে তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় জীবিত ছিলেন একজন। এমন বর্বরতা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। সেই ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে। এর মধ্যে আট জন পলাতক। সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে আজ আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয়েছে। আগামীকাল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।

এর আগে সকালে এ মামলার আসামিদের কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন– ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, শেখ আফজালুল হক ও কনস্টেবল মুকুল।

এই মামলায় গত ২ জুলাই ১৬ আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন টিম। অভিযোগটি আমলে নিয়ে পলাতক আট আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে এ মামলার পলাতক আট আসামিকে গ্রেফতারসহ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৬ জুলাই এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এরপর গত ২৮ জুলাই এ মামলায় পলাতক আসামীদের পক্ষে সরকারি খরচে দুজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে ২১ আগস্ট এই মামলায় রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন পুলিশ সদস্য শেখ আফজালুল হক। তিনি এই মামলার আসামি ও আশুলিয়া থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। এরপর পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নৃশংস এ ঘটনার সময় একজন জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও বাঁচতে দেননি তারা। পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত মানুষকেই পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.