অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ জাকসু নির্বাচন: ভিপি প্রার্থী আরিফুজ্জামান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে খারাপ হলেও জাকসু থাকা ভালো বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেল শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রশাসন সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে অক্ষম ছিল। নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের শুরু থেকেই অসংগতি লক্ষ্য করা গেছে। তফসিলে ঘোষিত মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনের আগের রাতেই নির্দিষ্ট একটি দলকে সুবিধা দিতে সময় বাড়ানো হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ভোটার ও প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর এক ভিপি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হওয়া ও পরবর্তী আইনি জটিলতা নির্বাচনে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া ব্যালট পেপার ছাপানো নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রশাসনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ডোপ টেস্ট করানোর বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করা, ডোপ টেস্টের ফলাফল এখনো পাওয়া না যাওয়া, ও নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করেও শেষ পর্যন্ত স্বল্প সময়ের নোটিশে এজেন্ট অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন, যা নির্দিষ্ট পক্ষকে সুবিধা দিয়েছে বলে মনে করেন ভিপি প্রার্থী।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের সমর্থকরা লিফলেট বিতরণ এবং পরিচয় যাচাই না করে ভোটার প্রবেশ করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, অধিকাংশ হলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হয়নি বা সহজেই উঠে গেছে। ভোটার তালিকায় নামের পাশে ছবি ছিল না এবং ব্যালট পেপারে ভুল থাকায় ভোটাররা লিখে ভোট দিতে বাধ্য হয়েছেন।

ভোটার উপস্থিতির তালিকায় কলমের পরিবর্তে পেনসিল ব্যবহার করায় একাধিকবার ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। কিছু কেন্দ্রে একজন ভোটারের বদলে অন্য কেউ ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন এবং ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের কর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে টোকেন ও লিফলেট বিতরণ করেছে।

সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের সদিচ্ছা ও প্রস্তুতির অভাব নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বলে মন্তব্য করেন আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘অবশ্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রশাসন বাধ্য হয়ে নির্বাচন আয়োজন করেছে, যার সুযোগ নিয়েছে একটি পক্ষ। অন্য পক্ষ পেশিশক্তি দিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।’

তবে এসব বাধা অতিক্রম করেও শিক্ষার্থীদের ভোটদান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের প্রমাণ বলে উল্লেখ করেন বাগছাস-সমর্থিত প্যানেল শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের এই ভিপি প্রার্থী।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.