বাংলাদেশে গত ৫০ বছরে কীটনাশকের ব্যবহার ৪০ হাজার মেট্রিক টন বেড়েছে। ১৯৭২ সালে দেশে কীটনাশকের ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৪০ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। ধান, শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদনে এসব কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধু গত ৫ বছরের মধ্যে এর ব্যবহার বেড়েছে ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ।
জার্নালিস্ট ওয়ারিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন শীর্ষক কর্মশালায় উত্থাপিত এক উপস্থাপনায় এসব তথ্য দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে এ কর্মশালার আয়োজন করে সিএবিআই।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম এবং সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আব্দুল মুঈদ।
বক্তব্য দেন কেবির এশিয়া বিষয়ক ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার আজমত আব্বাস, বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ড. সালেহ আহমেদ এবং প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. দিলরুবা শারমিন। উপস্থিত ছিলেন সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের কারণে ফসলে কীটনাশক ব্যবহার কমাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এখন কীটনাশক ব্যবহারের আগে তারা চিন্তা করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কীটনাশকের অযথা ব্যবহার কমাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন সেভাবে বাড়েনি। তাই আমাদের ২০৫০ সালের মধ্যে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আব্দুল মুঈদ বলেন, কীটনাশকের ব্যবহার পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণের জন্য হলেও এটি মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কেননা কীটনাশক ব্যবহারের কারণে অনেক রোগবালাইয়ের জন্ম হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাই আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়টিও দেখতে হবে। কৃষিখাতে উন্নতির ফলে সারা বছর শাক-সবজি পাওয়া গেলেও সেগুলো কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। কেননা ক্যানসারে আক্রান্ত ৬৪ শতাংশই কৃষক। তারা কীটনাশক স্প্রে করতে গিয়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ সময় মূল প্রবন্ধে ড. দিলরুবা শারমিন বলেন, কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, দেশে ৫ হাজার কোটি টাকার কীটনাশকের বাজার রয়েছে। বর্তমানে মাছচাষেও কীটনাশকের ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে মাছের শুটকিতে প্রচুর প্রয়োগ হচ্ছে।
বায়ো-পেস্টিসাইড সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশে ১১০টি বায়ো-পেস্টিসাইড নিবন্ধিত আছে। সরকার ৪০টি কীটনাশককে বন্ধ করে দিয়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.