ইইউতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমেছে, তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশিরা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে প্রথমবার আশ্রয়ের আবেদনকারীর সংখ্যা কমেছে। চলতি বছরের মে মাসে এই সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৮০০ জন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম। তবে প্রাথমিক আবেদনকারীদের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে তৃতীয়।

ইউরোপের পরিসংখ্যান বলছে, মে মাসে ২০২৫ সালে ভেনেজুয়েলার ৮ হাজার ৮৫ জন নাগরিক প্রথমবারের মতো ইইউভুক্ত দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন, যা সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান (৪,৫৭৫ জন) এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ (৩,০৯৫ জন)। সিরিয়া রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।

তবে এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এপ্রিল মাসে আবেদন জমা পড়েছিল ৪৮ হাজার ৯৩৫টি—মে মাসের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কম।

ফলো-আপ আবেদনে বাড়তি চাপ

প্রাথমিক আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর দেওয়া ফলো-আপ আবেদন নিয়েও রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মে মাসে ইইউজুড়ে ফলো-আপ আবেদন জমা পড়ে ৭ হাজার ৫৮৫টি, যা আগের মাসের তুলনায় ৪ শতাংশ এবং আগের বছরের মে মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের একটি রায়ের প্রভাব এতে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই রায়ে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার বিশেষ গোষ্ঠীর (যেমন আফগান নারী) সবাই শরণার্থীর মর্যাদা পাবেন না। ফলে অনেকে পুনর্বিবেচনার জন্য ফলো-আপ আবেদন করছেন।

জার্মানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে আবেদন

ইইউর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে আশ্রয় আবেদন হ্রাস পেয়েছে সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে ৬১ হাজার ৩৩৬টি আবেদন জমা পড়ে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৪১৬।

জার্মান সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে এমন হ্রাস ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

শহর ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্বস্তি

আবেদনের সংখ্যা কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে জার্মানির শহর কর্তৃপক্ষ। জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অব সিটিজের প্রধান নির্বাহী ক্রিশ্চিয়ান শাউখারডট বলেছেন, “সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আশ্রয় আবেদন কমে আসার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ভালো দিক।” তবে অভিবাসীদের জন্য আবাসন, শিক্ষা ও সেবা খাতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন।

ছোট শহরগুলোতেও একই প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। টাউনস অ্যান্ড মিউনিসিপ্যালিটির প্রধান নির্বাহী আন্দ্রে বের্গহেগার বলেন, “আবেদনের সংখ্যা কমায় স্থানীয় সরকারগুলো কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে। তবে আগতদের ব্যবস্থাপনায় এখনও হিমশিম খেতে হচ্ছে।”

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.