আয়কর রিটার্নে সম্পদের বিবরণীতে যে তথ্য দিতে হয়, যাদের জন্য বাধ্যতামূলক

বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমার সময় সব করদাতার জন্য সম্পদের বিবরণী জমা বাধ্যতামূলক নয়। তবে যাদের আয় বা সম্পদের নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে বা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ছয় ধরনের করদাতার জন্য এই বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করেছে।

এ লক্ষ্যে আইটি-১০বি (২০০৩) ফরম ব্যবহার করতে হয়, যাতে করদাতার সম্পদ, দায়, ব্যয় ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করতে হয়।

যাঁদের জন্য সম্পদ বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক
১. সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারী

সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য প্রতি বছর রিটার্নের সঙ্গে সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক। এতে তাদের সম্পদের পরিবর্তন ও আয়ের স্বচ্ছতা নিরূপণ করা সহজ হয়।

২. ৫০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ থাকলে

যদি করদাতার মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য (বর্তমান বাজারদর নয়, অধিগ্রহণমূল্যে) ৫০ লাখ টাকা বা তার বেশি হয়, তাহলেও সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে।

৩. সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট থাকলে

ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কোনো সিটি করপোরেশন এলাকায় যদি কারও বাড়ি বা ফ্ল্যাট থাকে, তবে তা মূল্য ৫০ লাখ না হলেও বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক।

৪. গাড়ির মালিক হলে

একটি মোটরযান থাকলেই সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে, সম্পদের মোট মূল্য ৫০ লাখের নিচে হলেও।

৫. বিদেশে কোনো সম্পদ থাকলে

বিদেশে জমি, বাড়ি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিনিয়োগ বা অন্য কোনো সম্পদ থাকলে তা রিটার্নে সম্পদ বিবরণীতে প্রকাশ করতে হয়, দেশের সম্পদের পরিমাণ বিবেচ্য নয়।

৬. কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক

যাঁরা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক, তাঁদের জন্য সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক, সম্পদের পরিমাণ যাই হোক না কেন।

সম্পদ বিবরণীতে কী কী জানাতে হয়?

নিম্নোক্ত সম্পদ ও দায়ের বিস্তারিত তথ্য দিতে হয়:

ব্যবসায়িক সম্পদ ও মূলধন, শেয়ার ও অংশীদারি বিনিয়োগ, কৃষি ও অ-কৃষি জমি, ভবন, ব্যাংক জমা, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার–বন্ড, গাড়ি, অলংকার, আসবাবপত্র, নগদ অর্থ, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ঋণ প্রদান, বিদেশে অবস্থিত সম্পদ।

সবকিছুর টাকার অঙ্ক উল্লেখ করে মোট সম্পদ হিসাব করতে হয় এবং করদাতার স্বাক্ষর ও ঘোষণাসহ জমা দিতে হয়।

যদিও সব করদাতাকে সম্পদের বিবরণী দিতে হয় না, যারা উপরের যেকোনো একটি শর্ত পূরণ করেন, তাদের জন্য এটা বাধ্যতামূলক। তথ্য গোপন করলে বা ভুল তথ্য দিলে জরিমানা বা শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ বিবরণী দেওয়া করদাতার আইনগত দায়িত্ব।

অর্থসূচক/