সামরিক কুচকাওয়াজে চীনের নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের ঘোষণা

চীন জানিয়েছে, আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য সামরিক কুচকাওয়াজে দেশটি নতুন অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করবে—যা যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোকে-ও প্রথমবারের মতো এশীয় পরাশক্তিটির সর্বাধুনিক সামরিক সক্ষমতা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ এনে দেবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ সামরিক কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেবেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। খবর রয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এ আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন।

গত সপ্তাহান্তে রাজধানী বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলে একটি প্রধান সড়কের পাশে কিছু শপিং মল ও মেট্রোরেল বন্ধ করে এই কুচকাওয়াজের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু হয়।

আজ বুধবার (বেইজিংয়ে) এক ব্রিফিংয়ে আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা উ ঝেকে বলেন, “এবার প্রদর্শিত অস্ত্র ও সরঞ্জাম সবই দেশে তৈরি এবং সেনাবাহিনীর কার্যকরী ব্যবহারে থাকা প্রধান যুদ্ধসামগ্রী থেকে বাছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় একটি অংশ একেবারেই নতুন প্রযুক্তির, যা প্রথমবারের মতো সর্বসমক্ষে প্রদর্শিত হবে।”

তিনি জানান, “নতুন প্রজন্মের ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জাম প্রদর্শিত হবে, যার মধ্যে থাকবে হাইপারসনিক অস্ত্রও। আমাদের নতুন ধরনের যুদ্ধশক্তি প্রদর্শনের জন্যই এই আয়োজন,” বলেন ঝেকে।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চীন সামরিক খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। দেশটি বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক, যার প্রধান ক্রেতা পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশ।

হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে চীনকে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো অত্যন্ত দ্রুতগামী, নিচু দিয়ে উড়ে এবং প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাগালের বাইরে চলে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন–রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই প্রযুক্তি। ২০২৪ সালে ইউক্রেন বলেছিল, রাশিয়া যুদ্ধে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

তবে চীনের এসব প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। দুর্নীতি চীনের সেনাবাহিনীর সামগ্রিক সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে ধারণা করেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শি জিনপিং সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহকারী বিভাগও।

গত জুলাইয়ে দুর্নীতির কলঙ্ক কাটাতে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর আস্থা ফেরাতে চীনের শীর্ষ সামরিক কর্তৃপক্ষ ব্যাপক পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করে। আর এই সংস্কার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তীব্র প্রতিযোগিতার সময়েই করা হচ্ছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.