ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় ‘অড’ অঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে পুড়েছে রাজধানী প্যারিসের চেয়েও বড় এলাকা। গত ৮০ বছরে এটিই ইউরোপের দেশটির সবচেয়ে বড় দাবানল বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
দাবানলে ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যু ও অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। সাঁ লরঁ দ্য লা ক্যাবরিস গ্রামে আগুনে একজন প্রাণ হারান। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় অনেক সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দা ও পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু এলাকা পরিদর্শন করে একে “নজিরবিহীন দুর্যোগ” বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো জানিয়েছেন, ১৯৪৯ সালের পর এত বড় দাবানল আর হয়নি। এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়েছে, যা সাম্প্রতিক কয়েক বছরের সমগ্র পোড়া এলাকার সমান।
ডাচ পর্যটক রেনাতে কুট বলেন, “এক মুহূর্তে সবকিছু পাল্টে গেল। গাড়িতে লাফ দিয়ে পালাতে হয়েছে— অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছি।”
স্প্যানিশ পর্যটক ইসা মেদিনা বলেন, “এটা একেবারে ধ্বংসযজ্ঞ।”
প্রায় ২,০০০ দমকল কর্মী আগুন নেভাতে কাজ করছেন। প্রায় ২,৫০০ পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র এরিক ব্রোকার্দি জানান, আগুন ঘণ্টায় ৫.৫ কিমি গতিতে ছড়াচ্ছে।
প্রচণ্ড গরম ও দিক পরিবর্তনশীল বাতাস আগুন নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরম ও শুষ্কতার কারণে দাবানলের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন বসন্ত ও শরৎকালেও দাবানলের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, এমনকি ফ্রান্সের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলেও।
এদিকে ইউরোপের আরও দুই দেশেও দাবানল পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় তারিফা এলাকায় ক্যাম্পসাইটে আগুন ধরে তা দাবানলে রূপ নেয়। ঘণ্টায় ৫০ কিমি গতির বাতাসের সঙ্গে তীব্র গরম আগুনকে আরও জটিল করে তুলছে। আন্দালুসিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও সান্স জানান, আগুন একাধিকবার নেভানো সত্ত্বেও আবার জ্বলে উঠছে।
পর্তুগালেও চলতি বছর দাবানলে ৪২ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়েছে, যা গত বছরের তুলনায় আট গুণ বেশি। এর অর্ধেক পুড়েছে গত দুই সপ্তাহেই।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.