গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান এফ রহমানের লন্ডনে থাকা দুটি সম্পত্তি জব্দের আদেশ (ফ্রিজিং অর্ডার) পেয়েছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
কোম্পানি ও প্রপার্টি ফাইল অনুযায়ী, এই সম্পত্তিগুলোর মালিক আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। তার বাবা ব্যবসায়ী সালমান ফজলুর রহমান ছিলেন শেখ হাসিনার বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশি শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
সরকারি রেকর্ড থেকে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে যুক্ত সম্পদের সন্ধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাজ্যের ওপর চাপ বৃদ্ধির পর এনসিএ ৯টি সম্পদ জব্দের আদেশ পেয়েছে। এই আদেশের ফলে আহমেদ শায়ান রহমান এবং তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমান লন্ডনের গ্রোসভেনর স্কয়ারে অ্যাপার্টমেন্টসহ কোনো সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবেন না। বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার মিত্রদের মালিকানাধীন যুক্তরাজ্যের সম্পদের বিষয়ে গার্ডিয়ানের তদন্তে তাদের নাম উঠে আসে।
দুটি সম্পত্তির মধ্যে একটি লন্ডনের অভিজাত ১৭ গ্রোভনার স্কয়ারের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। এটি ২০১০ সালে ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়। অপর সম্পত্তি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনসের একটি বাড়ি, যা ২০১১ সালে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়।
যুক্তরাজ্যের ইলেকটোরাল রোলের তথ্যানুযায়ী, গ্রেশাম গার্ডেন্সের ওই বাড়িতে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা থাকতেন। রেহানা যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও ও বর্তমান পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের মা। তবে তিনি এখনও ওই বাড়িতে থাকেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি দুর্নীতির তদন্তে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসার পর তিনি এই কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। টিউলিপ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করেন।
বিবৃতিতে এনসিএর বলেছে, আমরা নিশ্চিত করতে পারি, একটি চলমান ফৌজদারি তদন্তের অংশ হিসেবে লন্ডনের ১৭ গ্রোভনার স্কয়ার ও গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত সম্পত্তি জব্দের আদেশ (ফ্রিজিং অর্ডার) পেয়েছে এনসিএ। এর চেয়ে বেশি কিছু এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, সালমান ও শায়ান এফ রহমান উভয়েই অর্থ আত্মসাতের তদন্তে সন্দেহভাজন।
ফাইল থেকে জানা গেছে, এই সম্পত্তিগুলো আইল অভ ম্যান-এর অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়।
শায়ানের একজন মুখপাত্র বলেন, আমাদের মক্কেল জোরালোভাবে যেকোনো অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি অবশ্যই যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করবেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন প্রকাশ্য বিষয়। সেখানে শত শত মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমরা আশা করি, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.