রাতের আঁধারে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হওয়ার তিনদিন পর আল আমিনের লাশ ফেরত দিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি সীমান্তের জিরো পয়েন্ট দিয়ে তার লাশ ফেরত দেওয়া হয়।
বিএসএফ ও বিজিবির উপস্থিতিতে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার কোতয়ালি থানার পুলিশ, বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন পুলিশ আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষে তার লাশ তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেন। রাতেই পুলিশ তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।
জানা যায়, নিহত আল আমিনের লাশ ফেরত আনার জন্য কূটনৈতিক যোগাযোগ ও একাধিক পতাকা বৈঠক করা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।
আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার জিন্নাতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গত ৮ মার্চ নীলফামারী ৫৬ বিজিবির ভিতরগড় বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বিপরীত ভারতের ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ ভাটপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাচারের সময় উভয় দেশের ১৫-২০ জন গরু চোরাকারবারির সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ গুলি করলে আল আমিন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তিনি ওই গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে। গুলি করার পর বিএসএফ নিহতের মরদেহ নিয়ে যায় এবং পরে সেটি ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ঘটনার পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ভিতরগড় ও বাংলাবান্ধা সীমান্তে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক ও সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবি কর্মকর্তারা বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকের ওপর গুলি চালানো সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও অপ্রত্যাশিত। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।’
জবাবে বিএসএফ জানায়, আল আমিনের মৃত্যুর ঘটনা অনিচ্ছাকৃত ছিল। তারা দাবি করে, নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল তারা। বিএসএফ প্রতিনিধি দল এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নরেশ চন্দ্র দাস বলেন, বিএসএফ রাতে লাশ ফেরত দিয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আল আমিনের বড় ভাই মোস্তফা কামালের কাছে লাশ হস্তান্তর করি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.