কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শান্তিরক্ষী বাহিনীর ১৩ সদস্য নিহত

গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ১৩ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩-এর সঙ্গে সংঘর্ষে তারা নিহত হন।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) লন্ডন ভিত্তিক গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে নয়জন দক্ষিণ আফ্রিকার, তিনজন মালাউইয়ের ও একজন উরুগুয়ের।

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের গোমা শহরে এম২৩ বিদ্রোহীদের অগ্রগতি ঠেকানোর সময় এ সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সেনারা শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে ওই এলাকায় বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করছিলেন। সংঘর্ষে গোমা শহরে উত্তেজনা আরো বেড়েছে।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। শনিবার তিনি কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতাদের সঙ্গে পৃথক ফোনালাপে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানান।

এরই মধ্যে জাতিসংঘ গোমা থেকে এর কর্মীদের সরিয়ে নেয়া শুরু করেছে। প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের এ শহরে সংঘর্ষ ক্রমে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সোমবার নির্ধারিত বৈঠকটি একদিন এগিয়ে রোববার করেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি বছরে কঙ্গোর সংঘাতের কারণে চার লাখেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে। স্থানীয় নেতারা বলছেন, এম২৩ বিদ্রোহীদের দখলকৃত এলাকায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কয়েকশ মানুষকে গোমার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে রক্তপাত এড়াতে এম২৩ গোষ্ঠী গোমার কঙ্গো সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে বিদ্রোহের পেছনে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ এনে প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে কঙ্গো।

কঙ্গোর অভিযোগ, রুয়ান্ডা এম২৩ বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে। তবে রুয়ান্ডা এ অভিযোগ স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের গোমা ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সতর্ক করে বলেছে, কঙ্গোর সেনাবাহিনী ও এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধের ফলে বেসামরিক জনগোষ্ঠী আরো ঝুঁকির মুখে পড়ছে। মানবাধিকার সংস্থাটি উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে বেসামরিকদের ওপর গুরুতর নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.