ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘনিষ্ঠ মিত্র ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। গত সপ্তাহে ফ্রান্সে ঐতিহাসিক অনাস্থা ভোটে ডানপন্থী মিশেল বার্নিয়ের পতনের পর স্থিতিশীলতা আনার প্রচেষ্টা হিসেবে অভিজ্ঞ মধ্যপন্থী নেতা বাইরুকে বেছে নিলেন মাখোঁ।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের সময় বাইরু ফ্রান্সের সরকারি ঋণের গুরুতর সমস্যার কথা স্বীকার করেন এবং সংসদের বাজেট অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি বলেন, এই কাজ রাজনৈতিকভাবে হিমালয় পর্বত আরোহনের মতোই বিশাল। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনীতিবিদদের এবং আস্থা হারানো ভোটারদের মধ্যে থাকা ‘কাঁচের দেয়াল’ ভাঙার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ফ্রান্সের পুনর্মিলন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
৭৩ বছর বয়সী বাইরু হলেন মধ্যপন্থী মোডেম পার্টির নেতা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি নিজেকে ‘গ্রামের মানুষ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি একজন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের পৌ শহরের মেয়র। ২০১৭ সালে ইমানুয়েল মাখোঁ ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বিশ্বাসী হিসেবে রয়েছেন বাইরু।
ক্ষমতা গ্রহণের পর ৭৩ বছর বয়সী বায়রোর প্রথম কাজ হবে ২০২৪ সালে পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত বাজেটের পথ সুগম করার জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করা। মূলত এই ইস্যুটি নিয়ে পার্লামেন্টে সরকারি ও বিরোধী এমপিদের অনাকাঙ্ক্ষিত লড়াই ও টানাপোড়েনের জেরে বিদায় নিতে হয়েছে বার্নিয়েকে।
প্রেসিডেন্ট মাখোঁ তার প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মাঝামাঝি সময় পার করছেন। তার নিয়োগ করা ফ্রাঁসোয়া বাইরু হবেন এবছরের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী। এলিসি প্রাসাদে মাখোঁর সঙ্গে আলোচনা হওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। মাক্রোঁ বৃহস্পতিবারেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি তা পিছিয়ে গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) নাম ঘোষণা করলেন।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে কট্টর ডানপন্থী, বামপন্থী এবং মধ্যপন্থী— সব দলের আইনপ্রণেতারা রয়েছেন। মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত বাইরু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আইনপ্রণেতারা।
ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী দল হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) প্রেসিডেন্ট জর্ডান বারডেল্লা রয়টার্সকে বলেন, আপাতত বাইরুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কোনো পরিকল্পনা দলের নেই। আরএনের জ্যেষ্ঠ নেত্রী এবং পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা ম্যারিন লা পেন জানিয়েছেন, বাইরুর উচিত হবে বাজেট ইস্যুতে বিরোধীদের বক্তব্য শোনা।
এদিকে ফ্রান্সের বামপন্থী নেতা ফ্যাবিয়েন রৌসেল বলেছেন, বাইরুকে অবশ্যই বাজেট সংক্রান্ত বিশেষ আইন শিগগরই পাস করতে হবে। যদি তিনি এতে বিলম্ব করেন, তাহলে বামপন্থীরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.