ঋণ জালিয়াতি ও রেকর্ড খেলাপিতে জর্জরিত ব্যাংক খাত

বিগত সরকারের আমলে দেশের ব্যাংক খাতে একের পর এক ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এ খাতের খেলাপি ঋণ। এর ফলে দেশের ব্যাংক খাত অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক দুর্বল হয়ে পড়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের বেশি সময়ের ব্যাংকখাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামীলীগ আমলে প্রায় এক ডজন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় এসব ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয় বলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছিলেন যে, রাজনৈতিক কারণে এসব লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার কয়েক বছর পর থেকেই ব্যাংকখাতে একের পর এক বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারি সামনে আসতে থাকে, এতে করে ব্যাংকখাতের দুর্বলতাগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এরপর ২০১০ সালের শুরুতে ব্যাংকখাতে অন্যতম চাঞ্চল্যকর ঋণ জালিয়াতির জন্য হলমার্ক গ্রুপের নাম সামনে আসে। অখ্যাত এই কোম্পানি কাগজপত্র জাল করে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নেয় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে।

এরপরেই সামনে আসে বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারি। রাজনৈতিক বিবেচনায় এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তার সময়েই ব্যাংকটি ৪ হাজার কোটি টাকার উপরে ঋণ দেয় জালিয়াতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে।

প্রায় এক দশক আগে চেয়ারম্যান পদ থেকে বাচ্চুকে অপসারণ করা হলেও, এখনও চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে ব্যাংকটি।

সাম্প্রতিক সময়ে এসে, সম্পদের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে ব্যাপক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এই ব্যাংকের দখল নেওয়ার পর বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-ভিত্তিক এস আলম গ্রুপ শত শত কোটি ডলার পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সময়ে দেশের ব্যাংকখাত থেকে অন্তত ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে। এরমধ্যে এস আলম গ্রুপ ১০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.